হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া : শুধু প্রতিমা নয় এখানে প্রতিমার সঙ্গে পুজো করা হয় তরবারিও। পুরুলিয়ার জোড়বেড়িয়া রায় বাড়ির দুর্গাপুজোয় রয়েছে এমনই নিয়ম। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস। কথিত রয়েছে, এই পুজো শুরু করেছিলেন পঞ্চকোট রাজবংশের সেনাপতি হারাধন রায়। যিনি পেয়েছিলেন  রায়বাহাদুর উপাধি। তাঁর শুরু করা পুজোই এবার পা দিচ্ছে ২৫৬ বছরে।

  


কিন্তু হঠাৎ তরোয়াল কেন। এ বিষয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। তখন ব্রিটিশ আমল। ইংরেজদের হাত থেকে রাজাকে রক্ষা করতে পারেননি। সেই অনুশোচনায় অস্ত্র ত্যাগ করেছিলেন পঞ্চকোট রাজবংশের সেনাপতি হারাধন রায়। তবে তিনি ছিলেন বড় যোদ্ধা। তাই নিজের প্রিয় তরোয়ালটিকে খুবই শ্রদ্ধা করতেন। তাই দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2024) সময়ে তরোয়ালটিকে নামিয়ে দেবী দুর্গার পুজোর সময়ে পুজো করতেন নিজের প্রিয় অস্ত্রটিকেও। সেই থেকে জোড়বেড়িয়া গ্রামের রায় পরিবারে চল আসছে এই প্রথা। রাজার অনুমতি নিয়ে ১১২৬ সালে মূর্তি পুজো শুরু করেছিলেন হারাধন রায়।


প্রতি বছর প্রতিমার সঙ্গে পুজো পায় তরোয়ালটিও। কথিত আছে, তরোয়াল দিয়েই অষ্টমী, নবমী ও দশমীতে চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয় বলে জানা যায়। রায় পরিবারের দুর্গাপুজোয় কোনওরকম পশু বলি দেওয়ার রীতি নেই। আড়াইশো বছর ধরেই পুজোর সঙ্গে বংশানুক্রমিকভাবে যুক্ত রয়েছে কিছু পরিবার। তাঁরাই প্রতিবছর পুজোর দায়িত্ব নেন। 


প্রত্যেক বছরই রীতি মেনে পুজো হয় এখানে। মা দুর্গার এবং তাঁর চার ছেলেমেয়ের সঙ্গে পুজিতা হন জয়া, বিজয়া। প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে প্রতিমা। আয়োজনও প্রায় শেষের পথে। মায়ের আরাধনায় মেতে উঠতে প্রস্তুত জোড়বেড়িয়া রায় বাড়ি।  


জানা যায়, জোড়বেড়িয়ার এই রায় পরিবারের আদি বাসস্থান  বর্ধমান জেলার মনপুর গ্রামে। অতীতে রায় বংশের পদবি ছিল পাঁজা। পরবর্তীকালে পঞ্চকোট রাজবংশের রাজা নীলমনি সিংহদেয় তাঁদের রায়বাহাদুর উপাধি দিয়েছিলেন। সেই থেকে পাঁজার পরিবর্তে সেই পদবি বদলে রায় হয়েছে বলে জানা যায়। 


আরও পড়ুন :


দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা                 


২০২৪ এর দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট 



  • ষষ্ঠী পড়ছে ৯ তারিখ।

  • ১০ তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সপ্তমী।   

  • ১১ তারিখ অর্থাৎ শুক্রবার মহাষ্টমী। ওই দিনই পড়ছে মহানবমী।   

  • নবমীর পুজো শেষ হবে পরদিন ভোরে। ১২ অক্টোবর শনিবার বিজয়া দশমী।