কলকাতা: সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো ঘিরে বেনজির সংঘাত। পুজো বন্ধে পুলিশি চক্রান্তের অভিযোগ বিজেপি নেতা সজল ঘোষের। 'পুজো বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনা ঘটিয়ে উদ্যোক্তাদের ওপর দায় চাপানোর পরিকল্পনা। বড় রাস্তা আটকে দর্শনার্থীদের সরু রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করা হচ্ছে। নিরঞ্জনের আগেই নিরঞ্জন করে দিতে হতে পারে', পুলিশের বিরুদ্ধে এক গুচ্ছ অভিযোগ বিজেপি নেতা ও সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের অন্যতম উদ্যোক্তা সজল ঘোষের। নিরাপত্তার প্রশ্নে আপস নয়, বার্তা পুলিশ কমিশনারের। সাধারণের নিরাপত্তাই সবচেয়ে জরুরি। তার জন্য় যা যা করতে হবে, পুলিশ করছে', সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো নিয়ে বার্তা পুলিশ কমিশনারের।

Continues below advertisement

আরও পড়ুন, পুজোয় পিছু ছাড়ছে না খারাপ আবহাওয়া, অষ্টমী পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কা !

Continues below advertisement

রবিবার ষষ্ঠী। দেবীর বোধন। কিন্তু, তার আগেই শনিবার বিসর্জনের হুঁশিয়ারি শোনা গেল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোর অন্য়তম উদ্য়োক্তা এবং বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের মুখে! পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা এবং হেনস্থার মতো বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে বেনজির হুমকি দিলেন তিনি!সজল ঘোষ বলেন, 'যদি পুলিশ আমাদেরকে বাধা দেয়, আমরা আমাদের মণ্ডপের আশেপাশে আমরা যে আলোগুলো লাগিয়েছি, পুজো কমিটি যে লাইট লাগিয়েছে, সরকারি লাইট নয়। আমরা সেই লাইটগুলো নিষ্প্রদীপ করব। ঠাকুরের মুখ আমরা কালো কাপড়ে ঢাকব এবং, আমরা পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলে, আমরা যদি দরকার হয়, মাকে নিরঞ্জনের আগে নিরঞ্জনের ব্য়বস্থা করে দেব। এছাড়া আমার কাছে আর কিছু করার নেই। আমরা পার্মানেন্টলি বন্ধ করব। মানুষ তার বিচার করবেন। মানুষের কাছে এই আবেদন রাখলাম।' কলকাতার বিভিন্ন হাইপ্রোফাইল পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন তৃণমূলের সব হেভিওয়েট নেতারা।  অন্য়দিকে, উত্তর কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো পরিচিত, বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের পুজো বলে। সেই সজল ঘোষই শনিবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে, একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন!সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের বিজেপি কাউন্সিলর ও উদ্যোক্তা সজল ঘোষ বলেন, আরও যত পুজো আছে, মন্ত্রী সান্ত্রীদের পুজো, ১টা পুজোও তারা দেখাতে পারবে না। ১টা পুজোও দেখাতে পারবে না, ১টা চিঠি দিয়েছে। শুধু ১টা বেআইনি পুজো হচ্ছে বোধহয় সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। অথচ তার পারমিশন এই পুলিশ দিয়েছে। এই কর্পোরেশন দিয়েছে। যদি এরকম চলতে থাকে, তাহলে আমাদের কাছে পুজো বন্ধ করা ছাড়া, কারণ পুজোয় আমি কোনও রিস্ক নেব না। পুলিশ যেমন নেবে না, আমরাও নেব না। এরকম করে পুজো করা যায়? এতে তো বিপদ হবে। ২০ ফিটের রাস্তা ব্য়ারিকেড করে দিয়েছে। ৪ ফিটের রাস্তা দিয়ে ঢোকাচ্ছে। এতে দূরত্বও বাড়ছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, অসহযোগিতার কোনও বিষয় নয়। শিয়ালদহ স্টেশনে ভিড় হয়। এখন মেট্রো হয়েছে। ফলে চাপ বেশি। কোনও অসহযোগিতা নয়। ভিক্টিম কার্ড খেলার চেষ্টা করছে সজল ঘোষ। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোয় এবার লাইট অ্য়ান্ড সাউন্ডের মাধ্য়মে থিম হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অপারেশন সিঁদুর। সজল ঘোষের অভিযোগ, সেই লাইট অ্য়ান্ড সাউন্ডের পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকেও চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ। সজল ঘোষ বলেন, যারা এলইডির কাজ করতে এসেছে, তাদর কাঝে জিএসটির কাগজ, কত টাকায় আমাদের সঙ্গ চুক্তি এসব দেখতে চেয়েছে। সেটা কি পুলিশ পারে? অপরদিকে, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, কারও অভিযোগ থাকলে জিএসটি চাইবে। যদি তদন্তে দরকার পড়ে। অসুবিধা না থাকলে দিয়ে দেবে। সজল ঘোষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বারবার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।কলকাতা পুলিশ কমিশনার  মনোজ ভার্মা বলেন , আমার একটাই বলার থাকবে, সবাই যাতে নিয়ম মেনে চলে। তাহলে সবারই সুবিধা হবে। মানুষের নিরাপত্তায় কোনও আপস যাতে না হয়। দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো নিয়ে এই চাপানউতোরের জল কোনদিকে গড়াবে, সেটাই দেখার।