আবির দত্ত, কলকাতা: কলকাতার যে কয়েকটি বনেদি বাড়ির পুজো দেখতে ভিড় উপচে পড়ে, সেই তালিকায় হয়তো সবার প্রথমে থাকে শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। কলকাতার এই রাজবাড়ির দুর্গাপুজো হচ্ছে ২৬৭ বছর ধরে। বলা হয়ে থাকে, এটাই নাকি কলকাতার প্রথম দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023)।


সাবেকি এই দুর্গাপুজো পরতে পরতে রয়েছে বনেদিয়ানার ছাপ। ষষ্ঠী ও সপ্তমী পেরিয়ে অষ্টমীর পুজো চলছে শোভাবাজার রাজবাড়িতে। অষ্টমীর পুজো ঘিরে সকাল থেকেই তুমুল ব্যস্ততা শুরু হয়েছে এখানে। প্রথমে মহাস্নান। তারপর মায়ের আরতি আর হোম।


বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
শোভাবাজার রাজবাড়ির (Shobhabazar Rajbari Durga Puja) পুজোতে বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তারই মধ্যে অন্যতম হল নবঘট। নব পতাকা অর্থাৎ অষ্ট যোগিনীর পুজো। মায়ের নয়টি রূপ। তাই নয়টি ঘটে পুজো হয়। বৈশিষ্ট্য রয়েছে ভোগের ক্ষেত্রেও। ৬৪টি থালায় সাজিয়ে দেওয়া হয় নৈবেদ্য। দেবী উমা বাঙালির ঘরের মেয়ে। শোভাবাজার রাজবাড়িতে তাকে দেওয়া হয় মিষ্টি ভোগ। এই রাজবাড়ির পুজোয় মিষ্টির কারিগরও বাঁধা থাকে। মেদিনীপুর থেকে এসেছেন মিষ্টির কারিগররা। অষ্টমীর পুজোয় পুষ্পাঞ্জলি থেকে দেবীকে ভোগ নিবেদন করার পর, সন্ধিপুজোর প্রস্তুতিতে কোমর বেঁধে লেগে পড়েন শোভাবাজার রাজবাড়ির সদস্যরা। 



রাজ পরিবারের এক সদস্য বলেন, 'পরিবারের সব সদস্য এসে গিয়েছেন। মায়ের মিষ্টান্ন ভোগ রয়েছে। তাই চাল-দুধ রয়েছে। আমরা ব্রাক্ষ্মণ নই। তা মা নিজেই রান্না করে খাবে। ১০৮টি পদ্মের মালা মাকে পরানো হবে। আগেও এই নিয়ম ছিল। মাঝে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার আমরা শুরু করেছি।'


বেলুড় মঠেও তুঙ্গে ব্যস্ততা:
ইতিহাস, ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে বেলুড় মঠে (Belur Math) কুমারী পুজো। দেবীকে মৃন্ময়ী রূপে আরাধনার পাশাপাশি কুমারীর মধ্যে মাতৃরূপ দর্শন, এই প্রথা মেনেই প্রতিবারের মতো এবারও বেলুড় মঠে কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। ৫-৭ বছর বয়সীদের নির্বাচন করা হয় কুমারীপুজোর জন্য। এবারের কুমারী সীমন্তিনী ঘোষাল। বয়স ৫ বছর ৭ মাস। সুভগা রূপে পুজো করা হল হাওড়ার বাগনানের সীমন্তিনীকে। ১৯০১ সালে মা সারদার উপস্থিতিতে ৯ জন কুমারীকে পুজো করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সেই থেকেই চলে আসছে এই প্রথা। কুমারী পুজো দেখতে সকাল থেকেই বেলুড় মঠে রয়েছে ভিড় জমান ভক্তরা। 


আরও পড়ুন: লাঠি খেলে পালিত বীরাষ্টমী! শতবর্ষ পেরিয়েছে কলকাতার এই বারোয়ারি