মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যেতেই নজরে আসে ভয়ঙ্কর বিভ্রাট। প্রৌঢ়ের মৃতদেহের বদলে গেল প্রৌঢ়ার মৃতদেহে! চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ হাসপাতালের বিরুদ্ধে, ক্ষমা চাইল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 


ঠিক কী ঘটেছে? 


ফুলের মালা দিয়ে জানানো হচ্ছিল শেষ শ্রদ্ধা। দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতিও চলছে তখন। হঠাৎই মুখ খুলে দেখতেই আঁতকে উঠল সকলে। প্রৌঢ়ের মৃতদেহের বদলে প্রৌঢ়ার মৃতদেহ দেখে থমকে গেল পরিবার-পরিজনেরা ও এলাকাবাসীরা। 


অভিযোগ, কয়েকদিন আগে দুর্গাপুরের বেনাচিতির ৭১ বছরের প্রৌঢ় নৃপেন্দ্রনাথ শ্যাম ভর্তি হয়েছিলেন দুর্গাপুরের বিধাননগর পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দুদিন আগে দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার দেশবন্ধু নগরের কনক মজুমদারও ভর্তি হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে। বুধবার রাতে ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় দুজনেরই। 


বৃহস্পতিবার সকালে বেনাচিতির মৃত নৃপেন্দ্রনাথ শ্যামের দেহ নিয়ে যায় পরিবার-পরিজনের। পাড়ার ক্লাবে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ। তখনই মৃতদেহের মুখ ভালো করে দেখতেই চোখ কপালে ওঠে পরিবার-পরিজনের ও এলাকাবাসীর। দেখতে পান নৃপেন্দ্রনাথ বাবুর দেহের বদলে এক মহিলার মৃতদেহ রয়েছে। স্বর্গরথে করেই হাসপাতালে সেই মৃতদেহ নিয়ে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। 


অন্যদিকে মৃতা প্রৌঢ়া কনক মজুমদারের পরিবারের লোকজন সেই কথা জানতে পেরে হাসপাতালের সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রানু পান অভিযোগ করেন, তাঁর পিসি বুধবার রাতে এই হাসপাতালে মারা যান। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেহ নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। তারই মধ্যে খবর পান তাঁর পিসির দেহ বদলে গিয়েছে। এক প্রৌঢ়ের মৃতদেহের জায়গায় তাঁর পিসির মৃতদেহ চলে গিয়েছে।                                                     


আরও পড়ুন, পোকা ধরা চাল-আটা, নিম্নমানের রেশন দেওয়া নিয়ে ডিলারকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ


হাসপাতালে চূড়ান্ত গাফিলতি ছাড়া এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না বলেও অভিযোগ তোলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে  পুরো অভিযোগ স্বীকার করে নেন হাসপাতালের কর্ণধার পঙ্কজ মুখোপাধ্যায় বলেন। তিনি বলেন, মৃতদেহ সনাক্ত করতে ভুল হয়েছিল। মর্গের দায়িত্ব থাকা কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকেও নজরদারি বাড়াবেন বলেও জানান তিনি।