মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : 
বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে উকি দিচ্ছে কয়েক মাস আগে বসানো  যন্ত্র। প্রশ্নের মুখে দুর্গাপুরের (Durgapur) বেসরকারি হাসপাতাল। রোগীকে বাঁচাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দ্বারস্থ হয়েছে পরিবার। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। যদিও পরিবারের দাবি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে আবার রোগীকে ভর্তি নিয়েছে হাসপাতাল । 


দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী কাশীনাথ চৌধুরী কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে হার্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। চিকিৎসকরা সেই সময় পেশমেকার যন্ত্র ( pacemaker) বসান।  কিন্ত গত বছর শেষের দিক করে হঠাৎ ফের বুকে ব্যাথা (Chest Pain ) শুরু হয় তাঁর। দেরি না করে দুর্গাপুরের বিধাননগরের কাছে একটি বেসরকারি  হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে। ৯ ডিসেম্বর বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার (Operation)  হয় কাশীনাথ চৌধুরীর।


হার্টের গতি (Heart Rate ) নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অত্যাধুনিক মানের সি.আর.টি.ডি নামে একটি যন্ত্র লাগানো হয়। বিপত্তির শুরুটা তারপর থেকেই । দিনকয়েক পর  হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর দিন-পনেরো কাটতে না কাটতে ফের বুকে ব্যাথা শুরু হয় কাশীনাথ চৌধুরীর। একটা ছোট গর্তের মতো তৈরি হয় বুকের বাম দিকে অস্ত্রপ্রচারের জায়গা থেকে।


এরপর থেকে প্রতিনিয়ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনওরকম গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। দিন কয়েক পর এবার ভেতরের ঐ যন্ত্র বাইরে গর্ত দিয়ে বেরিয়ে আসে। এরপর থেকেই শুরু হয় চৌধুরী পরিবারের আতঙ্ক। প্রায় ৭ লক্ষ টাকা এর মধ্যেই খরচ হয়ে গিয়েছে পরিবারের। আর হাসপাতালের প্রতিক্রিয়া ? রোগীর পরিবারের অভিযোগ,  যখনই রোগীর এই অবস্থার কথা জানানো হয়, তখনই ইনফেকশন বলে স্রেফ ড্রেসিং করে ছেড়ে দেয়।  পরিবারের অভিযোগ, অবস্থার অবনতি হওয়ায় এবার গোটা পরিবার  স্বাস্থ্য মন্ত্রককে মেল করে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানায়। 

মেল পেয়ে তড়িঘড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর, দুর্গাপুরের বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়। নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে সঙ্গে  বিড়ম্বনা এড়াতে  বুধবার সকালে রোগী সহ পরিবারের লোকজনকে ডেকে পাঠানো হয় । হাসপাতালে বসে বোর্ড মিটিং। অত্যন্ত সঙ্কটজনক অবস্থায় বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা ওই যন্ত্র বুকে চেপে নিয়ে রোগীকে নিয়ে আসা হয় বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, এদিন রোগীর ছেলেও এইদিন হাসপাতালে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

দুর্গাপুর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন পুরপিতা পল্লব রঞ্জন নাগ অবিলম্বে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান । যদিও দুর্গাপুরের বেসরকারি ঐ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে চিফ মেডিকেল সুপারেনটেনডেন্ট ডক্টর দুর্গাদাস রায় জানান, অভিযোগ ভিত্তিহীন, তদন্ত করে বোর্ড মিটিং করে সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ ইউনিস জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে হাসপাতালকে বলাও হয়েছে।