মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : পাঁচ লক্ষ টাকা দিলেই পাওয়া যাবে সরকারী চাকরির (Govt Job) নিয়োগপত্র। বন দফতরের (Forest Department) আধিকারিকের পরিচয় দেওয়া প্রতারকের ফাঁদে পড়লেন দুই যুবক। ধার দেনা করে দেওয়া টাকা খুইয়ে এখন বিচারের আশায় বসে রয়েছেন দিব্যেন্দু আচার্য্য নামে ওই যুবক। অন্যদিকে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা দুই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 


আরও পড়ুন - WB Corona Cases: রাজ্যে করোনা সংক্রমণে শীর্ষে কলকাতা, ১ দিনে সংক্রমিত ১৩৪ জন


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের বাসিন্দা দিব্যেন্দু আচার্য্যের তাঁর এক বন্ধুর সূত্র ধরে পরিচয় হয় সোমনাথ চক্রবর্তী এবং সঞ্জয় দাসের সঙ্গে। প্রসঙ্গত, তারা দুজনেই দুর্গাপুরেরই বাসিন্দা। সোমনাথ নিজেকে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার এবং সঞ্জয় নিজেকে রেঞ্জ অফিসার বলে পরিচয় দেয়। বন্ধুর এক কাকার মাধ্যমেই দিব্যেন্দু আচার্য্যের পরিচয় হয় ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে। চাকরির আশ্বাস দেওয়ায় খুব তাড়াতাড়িই যুবকের পরিবারের অন্যান্যদের বিশ্বাস আদায় করে নেয় তারা। পাশাপাশি কীভাবে চাকরি পাওয়া যাবে, সে সম্পর্কেও যুবক এবং তাঁর মা-কে জানিয়ে দেন তাঁর বন্ধুর কাকা। যুবকের পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, সোমনাথ এবং সঞ্জয় নামে দুই প্রতারক জানিয়েছিল যে, পাঁচ লক্ষ টাকা দিলেই সরকারী চাকরির নিয়োগপত্র পাওয়া যাবে। চাকরি পাওয়ার আশায় অভিযুক্তদের কথায় বিশ্বাস করে ধার দেনা করে পাঁচ লক্ষ টাকা তাদের হাতে তুলে দেন ওই যুবক। গত ১৬ আগাস্ট প্রতারকদের হাতে টাকা তুলে দেন তাঁরা। এরপর ফের প্রতারকরা নতুন জাল ফাঁদে। বীরভূমের ইলামবাজারে এক জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের বলা হয় য়ে এটাই তাঁর কর্মস্থল। তার সঙ্গে সরকারী বন দফতরের লোগো দেওয়া নিয়োগপত্রও তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে। নিজে সরকারী চাকরির নিয়োগপত্র পেয়ে দিব্যেন্দু আচার্য্য নামে ওই যুবক সমস্ত ঘটনা জানান তাঁর এক বন্ধুকে। তিনিও সরকারী চাকরির আশায় লক্ষাধিক টাকা তুলে দেন প্রতারকদের। কিন্তু জঙ্গল পাহারা দেওয়া কাজ করতে গিয়ে পুলিশের জালে পড়ে যান যুবেকর বন্ধু। তিনি তখন চাকরির নিয়োগপত্র দেখানোর পর জানতে পারেন যে, ওই নিয়োগপত্র আসলে ভুয়ো। এরপরই দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় অভিযুক্তদের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যুবক ও তাঁর বন্ধু। দুই যুবকের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই অভিযুক্ত সোমনাথ চক্রবর্তী এবং সঞ্জয় দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, এভাবেই আরও অনেক বেকার যুবককে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করেছে দুই অভিযুক্ত।


আরও পড়ুন - Weather Updates: রবি ও সোমবার রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের


প্রতারণা শিকার দিব্যেন্দু আচার্য্য ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, 'আমার বাবা একটা বেসরকারী কারখানার সামান্য একজন নাইট গার্ড। খুবই অল্প টাকা বেতন পান। ধার দেনা করে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে এসেছিল। এখন ওই টাকা ফেরত না পেলে আত্মহত্যা করা ছাড়া গোটা পরিবারের কাছে আর কোনও রাস্তা খোলা থাকবে না।' দুর্গাপুরের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার নীলরতন পান্ডা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, প্রতারকদের সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন থাকা দরকার। সূত্রের খবর, শুধু দুর্গাপুরের এই দুই যুবকই নন, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার আরও বেশ কয়েকজন যুবকও এই দুই প্রতারকের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছেন। সমস্ত ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।