সন্দীপ সরকার ও অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়, দত্তপুকুর: দত্তপুকুরে (Duttapukur Incident) পরিত্যক্ত ইটভাটার ভিতর, খোঁজ মিলেছে অত্য়াধুনিক ল্য়াবরেটরির। সেখানেই পাওয়া গেছে এমন কিছু জার বন্দি কেমিক্য়াল। যেগুলি কিনা আনা হয়েছে ভিন রাজ্য় থেকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, সামান্য় বাজি বানানোর জন্য় কি ভিন রাজ্য় থেকে রাসায়নিক আনার প্রয়োজন পড়ে? কী কারণে আনা হয়েছে সেই রাসায়নিক? কোন কাজেই বা তা ব্য়বহার করা হয়েছে? উঠছে প্রশ্ন। (Duttapukur bomb blast) 


খোঁজ মেলে এই গবেষণাগারের


বিস্ফোরণের দিনই, মোচপোলে, বিস্ফোরণস্থল থেকে সাড়ে ৬০০ মিটার দূরে বেরো নারায়ণপুর গ্রামে খোঁজ মেলে এই গবেষণাগারের। যেখানে একের পর এক অত্য়াধুনিক মেশিন, টেস্টটিউব, অসংখ্য় বিকার। যেগুলো জার্মানিতে তৈরি, প্রচুর পরিমানে সলিড ও লিক্য়ুইড রাসায়নিক! মেজারমেন্টের জন্য় সিরিঞ্জ, শিল্ড লাগানো হেলমেট, গ্লাভস সব পাওয়া যায়। 


পুলিশ এলাকা ঘিরে দেওয়ার পরও, ঘটনাস্থলে চোখে পড়ল একটি ড্রাম। ড্রামের তলার দিকে এখনও কিছু রাসায়নিক রয়েছে। কিন্তু সেগুলি কী? তা ড্রামের গায়ে লেখা নেই। তবে, সেখানে লেখা একটি কোম্পানির নাম। জাইটেক্স কর্পোরেশন  


পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলছেন,  লাইসেন্স না থাকলে ভেন্ডার এর মাল সরবরাহ করার কথা নয়। এ ক্ষেত্রে লাইসেন্স ছিল না বোঝাই যাচ্ছে তা সত্বেও এই মেটেরিয়াল এলো কোথা থেকে কে সরবরাহ করল সেটা দেখা উচিত। মসলাগুলো দক্ষিণ ভারত গুজরাট থেকে আসে। জিএসটি যুক্ত অথরাইজড ভেন্ডার সে কাকে কতটা পরিমাণ দিচ্ছে সেটাও কিন্তু জিএসটি সিস্টেমে ধরা পড়বে। এটা অনেক ক্ষেত্রে মানা হয় না বলেই সব কিছু সরকারের ট্রাকে থাকে না আর বিস্ফোরণ ঘটে।


বারুদের স্তুপ! শিকেয় নিয়ম-কানুন!


কোথায় নজরদারি? শুভঙ্কর মান্নার কথায়, ম্যানুফ্যাকচারার সেক্টরে বাজির কারখানা করতে গেলে DM এর লাইসেন্স থাকতে হয়। র মেটেরিয়াল সেড ,মিক্সিং সেড , drying  shed,ট্রানজিট সেড থাকে যেখান থেকে ডেসপ্যাচ হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল এ ৯৮ পার্সেন্ট লাইসেন্স DM দেন । এই লাইসেন্সে ১৫ কেজি অব্দি মিক্সিং থাকতে পারে একসময় । এই সেডে দুজনের বেশি কেউ থাকতে পারবে না। ১৫ কেজি অবধি হচ্ছে ডি এম লাইসেন্স, ১৫ থেকে ১০০ কিলো পর্যন্ত পারমিশন দেয় পেশো কেন্দ্রীয় সংস্থা, লার্জ স্কেলে ১০০ কিলো র ওপরে পারমিশন দেয় চিফ এক্সপ্লোসিভ কন্ট্রোলার ।


বিস্ফোরক তৈরির জন্য় কাঁচামাল আসছে কোথা থেকে? সাধারণ মানুষ চাইলেই তো এই কাঁচামাল বাজার থেকে কিনতে পারে না! তার জন্য় প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন হয়! তাহলে কিভাবে স্পর্শকাতর রাসায়নিকের অবাধ যোগান ছিল এখানে? কোন চক্র কাজ করছিল? এর যোগ কি ভিনরাজ্য় অবধি ছড়িয়ে রয়েছে? এখন প্রশ্নগুলো নিয়েই শুরু হয়েছে গুঞ্জন।