ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূম: প্রবল বর্ষণ উত্তরবঙ্গ-সহ কম বেশি দেশের একাধিক জায়গাতেই বিপর্যস্ত অবস্থা। রাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কল্যানপুর হাউসিংয়ে সেতুর ওপর দিয়ে বইছে জল। নিষেধ করা সত্ত্বেও একটি চার চাকার গাড়ি নিয়ে সেই সেতু পার হতে গিয়ে জলের তোড়ে ভেসে গেল চালক-সহ গাড়ি !


অপরদিকে, বীরভূমের কঙ্কালীতলা মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করল জল। প্রবল বর্ষণে আগেই জল ঢুকে গিয়েছিল কঙ্কালী মন্দির চত্বরে।বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টিতে জেরেই চারিদিকে অথৈ জল। ভারী বর্ষণে কোপাই নদীর জলও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।তবে গর্ভগৃহে জল ঢুকতেই ঝুঁকি নিতে রাজি নয় মন্দির কর্তৃপক্ষ।কঙ্কালী মন্দিরের পুজো এবার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।


 প্রবল বর্ষণের ভয়াবহতা শুধু এরাজ্যেই নয়, দেশের একাধিক জায়গায়। দেশে ধস-বিধ্বস্ত ওয়েনাডে মৃতের সংখ্যা তিনশো ছাড়িয়ে গেল । কেরল সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, ভূমিধসে এখনও পর্যন্ত ৩০৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে নরম কাদামাটি সরাতেই উঠে আসছে দেহ আর দেহাংশ। পুরোদস্তুর মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ওয়েনাডের চূড়লমালা।ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে প্রাণের সন্ধান। দিল্লি থেকে ড্রোন-নির্ভর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রাডার দিয়ে প্রাণের খোঁজ চালানোর পরিকল্পনা। উদ্ধারকাজে প্রাণের খোঁজে কাজে লাগানো হবে ১০টি স্নিফার ডগ। ধসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বেইলি ব্রিজ তৈরির কাজ শেষ করেছে সেনাবাহিনী। চূড়লমালা গ্রামে পাঠানো হয়েছে ২৫টির বেশি অ্যাম্বুল্যান্স।


আরও পড়ুন, ধস-বিধ্বস্ত ওয়েনাডে আটকে বাংলার ২৪২ জন পরিযায়ী শ্রমিক, কী বার্তা রাজ্য সরকারের ?


ওয়েনাডে রাজ্যের ২৪২ জন পরিযায়ী শ্রমিক আটকে। রাজ্য যোগাযোগ কর‍তে পেরেছে ১৫৫ জনের সঙ্গে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের শ্রমিকরা আটকে। রাজ্য সরকার এঁদের ব্যাপারে খোঁজ রাখছে, বিধানসভায় জানালেন মন্ত্রী মলয় ঘটক।বেশ কয়েকদিন ধরেই লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ওয়েনাড। স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার রাত ৩টে নাগাদ ওয়েনাডের পাহাড়ি এলাকায় প্রথম ধস নামে। ঘণ্টাখানেক পর একাধিক জায়গা থেকে ধস নামার খবর আসতে শুরু করে। ভোরেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে উদ্ধারকাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ততক্ষণে একের পর এক গ্রাম জলের তলায় স্বজনহারাদের হাহাকার,আর আশ্রয় হারানো মানুষের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী। ঘুমের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে বহু জীবন। আশ্রয়হীন হয়েছে প্রায় ৪০০টির বেশি পরিবার।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।