রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান : ১টি বুথে মৃত ভোটার ৫৯ জন ! ভূতুড়ে ভোটারের তালিকা তৈরি করে নির্বাচন কমিশনকে জমা দিল বিজেপি। কেউ মারা গেছেন ১২ বছর আগে, কেউ ১০ বছর, কেউ ৫ বছর আগে, অথচ নাম রয়েছে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায়! কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের কোয়ারা গ্রামের ২৫৮ নম্বর বুথে ১১২৫ জনের মধ্যে মৃত ভোটার ৫৯ জন, দাবি বিজেপির। ভূতুড়ে ভোটারদের ভোট পেয়েই জিতছে তৃণমূল কংগ্রেস, আক্রমণ বিজেপির। মৃতদের নাম কেন ভোটার লিস্টে, দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস জেলাশাসকের।
আরও পড়ুন, ফের শহরে টাকার পাহাড়, তারাতলায় ব্যবসায়ীর অফিসে ED-র হানায় বিপুল অঙ্কের টাকার হদিশ !
কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকে একটি বুথেই ৫৯ জন মৃত ভোটার রয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। তালিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থও হয়েছে তারা। কোয়ারা গ্রামে ঘুরে দেখা গেল, তালিকায় নাম থাকা কারও মৃত্যু হয়েছে ১০ বছর আগে, কারও ৫ বছর আগে। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। নভেম্বরের শুরু থেকে SIR-এর কাজে বাড়ি বাড়ি যাবেন BLO-রা। তার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। আর এই আবহেই, মৃত ভোটারের তালিকা নিয়ে পূর্ব বর্ধমানে আগেভাগেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল বিজেপি। কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের কোয়ারা গ্রাম। এই গ্রামের ২৫৮ নম্বর বুথে রয়েছে ১ হাজার ১২৫ জন ভোটার। এর মধ্যে ৫৯জন ভোটার মৃত বলে দাবি বিজেপির।
কাটোয়া বিজেপি মণ্ডল সভাপতি সূর্যদেব ঘোষ বলেন, তৃণমূল বিগত দিনে যত নির্বাচন হয়েছে, ভোট তারা দিয়ে দিয়েছে। মরার পরও এরা মুক্তি পাচ্ছে না। নির্বাচন একটা করে আসে। আর এই মৃত ভোটারদের ভোট তৃণমূল করিয়ে নেয়। এই অভিযোগ নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছি। কোয়ারা তৃণমূল কংগ্রেস বুথ সভাপতি পুরাণচন্দ্র ঘোষ বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ। কোনও মৃত ব্যক্তির ভোট দিয়ে দেওয়া হয় না। মৃত ব্যক্তি কীভাবে ভোট দিতে আসবে? কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়। কাটোয়ার কোয়ারা গ্রামের ২৫৮ নম্বর বুথে বাস্তব ছবিটা ঠিক কী? এই যে ভোটার তালিকা নির্বাচন কমিশনের, সেই তালিকাতে এখানে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে জবা দাস তার নাম রয়েছে। যখন তার বাড়িতে এলাম পরিবার জানান ১০-১২ বছর আগে জবা দাস মারা গেছেন।
প্রশ্ন: জবা দাস আছে বাড়িতে? এটা কি জবা দাসের বাড়ি? মৃত ভোটারের মা: হ্যাঁ জবা দাসের বাড়ি। প্রশ্ন: আপনি জবা দাস? মৃত ভোটারের মা: না আমি জবা দাসের মা। প্রশ্ন: জবা দাসকে একটু ডেকে দিন না। মৃত ভোটারের মা: জবা দাস নেই। জবা দাস মৃত। মারা গেছে।
ভোটার তালিকা উল্টোতে গিয়ে খোঁজ মিলল এমন অনেকের।
প্রশ্ন: ভূতি দাসকে ডেকে দেবেন? একটু কথা বলতাম। মৃত ভোটারের আত্মীয় : উনি তো নেই। উনি মারা গেছে। প্রশ্ন: মারা গেছেন? কবে? মৃত ভোটারের আত্মীয় : আজ থেকে ১৩-১৪ বছর আগে। প্রশ্ন: এটা কে ভূতি দাসটা? মৃত ভোটারের আত্মীয় : ঠাকুমা।
প্রশ্ন: সন্ধ্যা দাস আছে বাড়িতে? মৃত ভোটারের আত্মীয় : না না। প্রশ্ন: আপনি কে হন? মৃত ভোটারের আত্মীয় : আমি বোনপো। মাসি হন আমার। প্রশ্ন: উনি কতদিন হল মারা গেছেন? মৃত ভোটারের আত্মীয় : ৫ বছর হবে।
SIR শুরু হলে কত ভূত ধরা পড়ে সেটাই দেখার।