রাণা দাস, নাদনঘাট (পূর্ব বর্ধমান) : পণ হিসেবে মোটরবাইকের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে বধূকে গঞ্জনা, অপমানের অভিযোগ। তারপরই শ্বশুরবাড়ি থেকে বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে বধূর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) নাদনঘাটের নসরত্পুরে।
কী জানা যাচ্ছে
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দেড়েক আগে কাপড় ব্যবসায়ী সুরজিত্ বসাকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মিতালি বসাকের। বধূর বাপের বাড়ি দাবি, মাস তিনেক আগে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁকে বাইক কিনে দেওয়ার জন্য স্ত্রীর বাপের বাড়ির ওপর চাপ দিতে শুরু করেন সুরজিত্। কিছুদিন আগে মৃতার বাবা জামাইকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে জানান, বাকি টাকা তিনি আস্তে আস্তে দিয়ে দেবেন। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। অভিযোগ, গত ৫ জুন, জামাইষষ্ঠী করতে এসেও সুরজিত্ পুরো টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে অশান্তির পর সুরজিত্ চলে যান।
গত ৮ জুন শাশুড়ি মিতালিকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে পাঠান। অভিযোগ, মিতালি শ্বশুরবাড়িতে গেলে মোটরবাইক না দেওয়ায় তাঁকে অন্য আত্মীয়দের সামনে চূড়ান্ত অপমান করা হয়। ওইদিন বিকেলেই শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হয় মিতালির ঝুলন্ত দেহ। মৃত বধূর বাপের বাড়ির তরফে নাদনঘাট থানায় স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ ও দেওরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয়।
কী বলছেন মৃত বধূর আত্মীয়রা
মৃতার বাবা অখিল বসাক বলেছেন, 'মোটরবাইকের দাবিতে মেয়েকে অত্যাচার করা হত। ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। বাকি টাকা বলেছিলাম পরে দেব। সেটা দিতে পারিনি বলে মেয়ের ওপর অত্যাচার করা হত। মেয়েেক ডেকে নিয়ে গিয়ে অপমান করে। সেই কারণেই মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।' অপর এক আত্মীয়ের দাবি, 'আমাদের মেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার নয়। ওকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, দেখা হোক। যদি মেরে নাও দেয়, তাহলে ওকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে।'
পুলিশ মৃতার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। তবে মৃতার ননদ ও দেওর পলাতক।
আরও পড়ুন- নার্সিংয়েই কি চাকরি রেণুর ? বেতন কত পাবেন ?