কলকাতা : "নার্সিংয়ে নয়, তবে নার্সিংয়ের (Nursing) গ্রেডেই কাজ করবেন কেতুগ্রামের (Ketugram) রেণু খাতুন (Renu Khatun)। নার্সিংয়ের কাজ না করে অন্য কোনও কাজ করবে। ওই নিয়োগপত্র ইতিমধ্যে ইস্যু করা হয়ে গেছে।" বৃহস্পতিবার একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীনই রেণুর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি জানান, ওয়েস্টবেঙ্গল হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড পূর্ব বর্ধমানে তাঁকে সুপারিশ করছে। স্টাফ নার্সের গ্রেড টু-তে চাকরি পেয়েছিল। পূর্ব বর্ধমানে কাজে লাগানো হচ্ছে। নার্সিংয়ে নয়, তবে যেহেতু নার্সিং পাশ করেছিল, নার্সিংয়ের গ্রেডেই থাকবে। ২৯ হাজার ৮০০ টাকা বেতন। তবে, নার্সিংয়ের কাজ না করে অন্য কোনও কাজ করবে। সুতরাং ওই নিয়োগপত্র ইতিমধ্যে ইস্যু করা হয়ে গেছে। ওঁর হাতের চিকিৎসার ব্যবস্থাও আমরা করব। আর আইন অনুযায়ী, পুলিশ যা পদক্ষেপ নেওয়ার নেবে। 


কী ঘটেছিল রেণুর সঙ্গে ?


২০২০ সালে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি পান রেণু খাতুন। স্ত্রী চাকরি করায় আপত্তি ছিল স্বামীর। সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই সরকারি চাকরির পরীক্ষা দেন তিনি। প্যানেলে নামও ওঠে রেণুর। কিন্তু সরকারি চাকরি পেলে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাবে সন্দেহ ছিল স্বামী শের মহম্মদ শেখের। 


আরও পড়ুন ; ডান হাতের কব্জি হারিয়েও হাল ছাড়তে নারাজ রেণু! বাঁ হাতেই লিখলেন-'I proud myself'


শনিবার রাতে অভিযুক্ত স্বামী, তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে বাড়িতে পিকনিক করে। অভিযোগ, রাতে সঙ্গীদের নিয়ে, ঘুমন্ত স্ত্রীর মুখে বালিশ চেপে ধরে। তারপর কেটে নেওয়া হয় হাত। শুধু স্ত্রীর হাত কেটে নেওয়াই নয়, কাটা হাত যাতে জোড়া লাগানো না যায় তাই, সেটি বাড়িতে লুকিয়ে রেখে, স্ত্রীকে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করে গা ঢাকা দেয় অভিযুক্ত। 


আক্রান্তের পরিবার দাবি করে, রীতিমতো পরিকল্পনা করেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে অভিযুক্ত শের মহম্মদ শেখ। স্ত্রীর হাত কাটার জন্য, আগেই মাংস কাটার ছুরি কিনে এনেছিল সে। 


ভালবেসে যাঁর হাত ধরেছিলেন, এক সাথে পথ চলা শুরু করেছিলেন, বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, সেই মানুষটাই, এক কোপে হাতটাই কেটে নিয়েছে। কাটোয়ায় এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে নড়ে ওঠে গোটা রাজ্য। হাত কেটে শাস্তি দেওয়ার কারণ কী ? না স্বামী না কি স্ত্রীকে সরকারি চাকরি করতে দিতে চান না। তাই না কি আস্ত হাতটাই কেটে ফেলা। আর, এই ভয়ঙ্কর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার মধ্যেই কাটোয়ার রেণুর পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার।