রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: স্বর্ণসাজে সজ্জিতা দেবী। মায়ের গায়ে কয়েক কোটি টাকার গয়না। কালীপুজোয় এভাবেই সেজে ওঠেন পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) কাটোয়ার (Katwa) খেপি মা। দূর-দূরান্ত থেকে আসেন ভক্তরা। ডাকাতদের (Dacoit) হাত ধরে যে পুজোর শুরু, তাই এখন সর্বজনীন হয়ে উঠেছে।


দেবীর সর্বাঙ্গ মোড়া স্বর্ণালঙ্কারে। বড় কানপাশা, সোনার মুকুট, জমকালো নথ, দু’ হাতে সোনার বাউটিকালীপুজোয় (Kali Puja 2022)এভাবেই সেজে ওঠেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার খেপি মা। দেবীর গায়ে কোটি কোটি টাকার গয়না। 


মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, এদিন ৪ কেজি সোনার গয়না ও ৫ কেজি রুপোর গয়না পরিয়ে মাকে সাজানো হয়। যার আনুমানিক মূল্য ২ কোটি টাকা। কথিত আছে, প্রায় ৪০০ বছর আগে এই এলাকায় ঘন জঙ্গল ছিল। দস্যুরা মা কালীর পুজো করে ডাকাতি করতে যেত। ডাকাতদের শুরু করা পুজোই কালে কালে সর্বজনীন রূপ নিয়েছে। একসময় ডাকাতির ভয়ে গয়না লুকিয়ে রাখতেন গৃহস্থরা। এখন ডাকাত-কালীর গয়নার পাহারায় থাকে পুলিশ। 


আজ কালীপুজো। কলকাতা থেকে কামাখ্যা। বীরভূম থেকে বারাসাত। দিকে দিকে সাড়ম্বরে শক্তি আরাধনার আয়োজন। শারদোত্সবের পর ফের উত্সবের আমেজ। দুর্গাপুজোর মতো কালী পুজোতেও বিভিন্ন জায়গায় চমক দিচ্ছে থিম। যদিও বাধ সেধেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আলোর উত্‍সবের মাঝেই নেমে এসেছে আশঙ্কার অন্ধকার। কিন্তু তাতে কী! মানুষের উত্সাহে ভাটা পড়েনি। কালো মেয়ের পায়ের তলায় আলোর নাচন দেখতে মণ্ডপ থেকে মন্দিরে ভিড় করেছেন দর্শনার্থীরা। সকাল থেকে দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট, তারাপীঠে মানুষের ঢল। একই ছবি অসমের নীলাচল পাহাড়ের কামাখ্যা মন্দিরে। 

দুর্যোগের আশঙ্কা নিয়েই আজ রাজ্যজুড়ে শক্তির আরাধনা। কলকাতা থেকে কামাখ্যা। বীরভূম থেকে বারাসাত। কালীপুজো উপলক্ষ্যে দিকে দিকে সাড়ম্বর আয়োজন। আলোর উৎসবে মাতোয়ারা তিলোত্তমা কলকাতাও। দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও থিমের হিড়িক। 


কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথির গভীর রাতে যোগিনী পরিবৃতা হয়ে আবির্ভূতা হন মা কালী৷ জগতে কল্যাণ এবং শান্তি স্থাপনের জন্য ভক্তরা দেবীর আরাধনা করেন৷ তিনি অসুখ বিনাশিনী৷ মহা শক্তিধর শুম্ভ-নিশুম্ভের হাত থেকে ত্রিলোককে রক্ষা করতেই দেবীর সৃষ্টি৷ নরমুণ্ডই দেবীর অলঙ্কার৷ যুদ্ধে পরাজিত সেনাপতিদের মুণ্ডের মালা মা কালীর কণ্ঠের শোভা৷ বলা হয়, পঞ্চাশটি মুণ্ডের এই মালা আসলে জ্ঞানের প্রতীক৷ যে সেনাপতি তাঁর চুল ধরে অপমান করেছিল, তাঁর মুণ্ড দেবী হাতে ধরে থাকেন৷ মৃত সেনাপতিদের হাতের পাতা দেবী কোমরে ধারণ করেন৷ শাস্ত্রমতে এই করতলও জ্ঞানের প্রতীক৷ ভুল করে স্বামী মহাদেবের গায়ে পা তুলে ফেলায় লজ্জিতা রণে উন্মত্ত দেবী৷