ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: প্রবল বৃষ্টি। আর তাতে ঘরে জল ঢুকে গিয়েছিল। সেই জলে পড়েই মৃত্যু হল দেড় বছরের ঘুমন্ত শিশুর। মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি ঘটেছে ভগবানপুর-১ ব্লকের কাজলাগড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হিংচাগেড়িয়া গ্রামে। রাত দুটোর সময় বিছানায় শিশু কন্যাকে না দেখতে পেয়ে মা খাটের নিচে দেখেন, মৃত অবস্থায় জলে ভেসে রয়েছে শিশু কন্যা। এদিকে এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
এদিকে গতকাল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল দমদমে ২ কিশোরীর। খড়দা, টিটাগড়ের পর দমদম। উত্তর ২৪ পরগনারই মতিঝিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ২ কিশোরীর। রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৮ জনের মৃত্যু হল। প্রতিবেশী দুই কিশোরীই, অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার, বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল দুই কিশোরী। পুরো রাস্তা জলমগ্ন থাকায়, সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় ল্যাম্পপোস্টে হাত দেয় এক কিশোরী। সঙ্গে সঙ্গে সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় অন্য কিশোরীও। স্থানীয়রাই দু’জনকে উদ্ধার করে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: মালদায় হবিবপুর ব্লকে শাশুড়িকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা জামাইয়ের
এদিকে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দায় একই পরিবারের ৩ জনের বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক। সরকারি আবাসন ছাড়ছে একাধিক পরিবার। জলমগ্ন আবাসনে শর্ট সার্কিট থেকে বিপদের আশঙ্কা করছেন আবাসিকরা। আশ্রয় নিচ্ছেন পঞ্চায়েতের ত্রাণশিবিরে। জলবন্দি ঘরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিন-তিনজনের মৃত্যু। মর্মান্তিক সেই ঘটনার সাক্ষী পরিবারের খুদে সদস্য। সেই ঘটনার পরের দিনই আবাসন ছেড়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল একাধিক পরিবার।
উত্তর ২৪ পরগনার খড়দার পাতুলিয়া সরকারি আবাসন জুড়ে এখন শুধুই আতঙ্ক। মঙ্গলবার এই আবাসনেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা-মা ও তাঁদের বড় ছেলের মৃত্যু হয়। প্রতিবেশীদের সূত্রে খবর, ঘরের মধ্যে জল জমে ছিল। সেই সময় মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন গৃহকর্তা স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন স্ত্রী। আর বাবা-মাকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় দশ বছরের বড় ছেলেও। খাটে বসে নিমেষের মধ্যে তিন-তিনজনের মৃত্যুর সাক্ষী হয় চার বছরের ছোট ছেলে। ওই ঘটনার জেরে পাতুলিয়ার এই সরকারি আবাসন ছেড়ে চলে যাচ্ছে একাধিক পরিবার। গ্রামপঞ্চায়েতের ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিচ্ছেন তাঁরা।