বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: দশমীর রাতে কোলাঘাট থানা এলাকায় প্রচুর পরিমাণে শব্দবাজি উদ্ধার (Fire Crackers)। মূলত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, তমলুকের SPDO সাকিব আহমেদের নেতৃত্বে অভিযান চালায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। জানা গিয়েছে, কোলাঘাটের কাঁকডিহি গ্রামে পূর্ণ চন্দ্র দাস নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে শব্দবাজি এবং বাজি তৈরি করার মশলা উদ্ধার করে পুলিশ। ইতিমধ্যে ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে কোলাঘাট থানার পুলিশ (Police)।
পুজোর আগে দত্তপুকুরের মোচপোল, কাঠুরিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ৬০০ কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সম্প্রতি ৫-৬টি গাড়ি করে উদ্ধার হওয়া বাজি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল থানায়। বাজি উদ্ধারে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি FIR-এ নাম থাকা রমজান আলি ওরফে কালোর খোঁজ করেছিল পুলিশ। মূল অভিযোগকারী প্রভাস চক্রবর্তীর অভিযোগে নাম ছিল ওই ISF কর্মীর। তাঁর বিরুদ্ধে কেরামত আলির সঙ্গে যোগসাজশে বেআইনি বাজি কারবারে মদত জোগানোর অভিযোগ উঠেছিল।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই বাজি-বিস্ফোরণে হারিয়েছিল একাধিক প্রাণ। এগরা, বজবজের জোড়া দুর্ঘটনার রেশ কাটার আগেই ফের বিস্ফোরণের ঘটনা সামনে এসেছিল বীরভূমের (Birbhum) দুবরাজপুরে। যার পরই বেআইনি বাজির (Illegal Crackers) বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল অভিযান। চলছিল ব্যাপক ধরপাকড়। হাজার হাজার কেজি বাজি উদ্ধার। বজবজে বেআইনিভাবে মজুত বাজিতে বিস্ফোরণে ৩টি প্রাণ ঝরে যাওয়ার পর অবশেষে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল পুলিশ (Police)।
অপরদিকে, ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দত্তপুকুরের মোচপোল (Duttapukur incident)। তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল প্রায় আস্ত একটা বাড়ি। ছিন্নভিন্ন দেহাংশ ছিটকে পড়েছিল প্রায় ২০০ মিটার দূরে। কারও কারও হাত-পা উড়ে যায়। আগুনে ঝলসে গিয়েছিল বেশ কয়েকজন। অনেকেই বলেছিলেন সেসময়, কয়েক কিলোমিটার দূরে বারাসাত পর্যন্ত শোনা গিয়েছিল বিস্ফোরণের শব্দ। বিস্ফোরণস্থলে নীল ড্রামে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (Amoneium Nitrate) ও পটাসিয়াম ক্লোরেট (Potassium Cloret)। বাজি কারখানার অদূরে হদিশ মিলেছিল ল্য়াবরেটরিরও। এই প্রেক্ষাপটে দত্তপুকুরে বিস্ফোরণে RDX ব্যবহার হয়েছিল বলে চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ তুলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ।
আরও পড়ুন, উৎসবের মাঝে ফের কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে একমাত্র গ্রিন বাজিই বৈধ। পশ্চিমবঙ্গে গ্রিন বাজির আওয়াজ ৯০ ডেসিবেলের মধ্যে হতে হয়। অন্য রাজ্য়ের ক্ষেত্রে গ্রিন বাজির শব্দ ১২০ ডেসিবেল। গ্রিন বাজিতে কী ধরনের মশলা ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের। ১৫ কেজি পর্যন্ত মশলা দিয়ে বাজি তৈরি করতে হলে, জেলা শাসকের থেকে অনুমতি নিতে হয়। ৫০০ কেজি পর্যন্ত মশলার বাজি তৈরি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কম্পট্রোলার অফ এক্সপ্লোসিভের অনুমতি লাগে। তার বেশি পরিমাণ বাজি তৈরির ক্ষেত্রে, অনুমতি নিতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারের চিফ কম্পট্রোলার অফ এক্সপ্লোসিভের।, বারবার প্রশ্ন একটাই উঠছে, এই নিয়ম ভাঙা হচ্ছে কেন ? উঠছে প্রশ্ন।