বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: কোলাঘাটে (Kolaghat) এক শিক্ষকের রহস্যমৃত্যু (Teacher's Death Mystery)। মঙ্গলবার বাড়ির অদূরে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ওই শিক্ষকের। কাঁথির ভবানিচক অঘোরচাঁদ হাইস্কুলের শিক্ষক বাপ্পা বর্মন (৩২) আত্মঘাতী হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।


পুলিশ সূত্রে খবর, ওই শিক্ষকের বাড়ি কোলাঘাট থানার দেড়িয়চক গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম মহল গ্রামে। ২০১৯ প্যানেল মোতাবেক তিনি ওই স্কুলে জয়েন করেন। মৃতের স্ত্রীর দাবি, গতকাল তাঁর স্বামীর ফোনে একটি ম্যাসেজ আসে। এটি জানতে পারেন তার স্ত্রী। এরপর তার স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথাবার্তা বলেন কিন্তু তাঁর স্বামী এই বিষয়ে তাকে কিছু বলতে চাননি। সকালে এই বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলবেন বলেছিলেন। কিন্তু ভোর পাঁচটা নাগাদ স্বামীকে দেখতে না পেয়ে পাশের একটি রান্নাঘরে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন তার স্বামী ঝুলে রয়েছে। এরপর তিনি প্রতিবেশীদের ডাকেন।


যদিও এই বিষয়ে মৃতের কাকু অজিত কুমার বর্মনের বক্তব্য, 'একটি ম্যাসেজ তার সমস্ত এলাকাবাসী ও রিলেটিভদের কাছে গিয়েছিল। সেই কারণেই হয়তো সে এই পথ বেছে নিয়েছে।' শিক্ষকের মৃত্যুর কারণ নিয়ে দ্বন্দ্বে এলাকাবাসী। তবে স্থানীয় শিক্ষকের বক্তব্য, 'যেহেতু শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে সারা রাজ্য তোলপাড় এবং একাধিক শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। সেই শোকেই আত্মহত্যা করেছেন ওই শিক্ষক। শিক্ষা দুর্নীতির এই চক্র বন্ধ হওয়া উচিত, না হলে রাজ্যের একাধিক জায়গায় এ ধরনের আরও কিছু শিক্ষকের প্রাণ যেতে পারে' বলে দাবি ওই শিক্ষকের। প্রকৃত মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে কোলাঘাট থানার পুলিশ। 


প্রসঙ্গত, গতকাল ৫ বছর পরে অবশেষে টেট (TET) উত্তীর্ণদের নম্বর প্রকাশ হয়। হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশের জেরে অবশেষে নম্বর প্রকাশ পর্ষদের। ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণদের নম্বর প্রকাশ করল প্রাথমিক পর্ষদ। চলতি সপ্তাহেই ২০১৪-র টেটের নম্বর প্রকাশের ঘোষণা। ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণ ৯ হাজার ৮৯৬জনে নম্বর প্রকাশ। উল্লেখ্য, টেটের প্রশ্ন ভুল মামলায় ভর্ত্‍‍সনা করে হাইকোর্ট। ‘প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দুর্নীতি ও অসৎ আচরণের জন্য বিখ্যাত, কিছু আধিকারিক ও আমলার অপদার্থতায় আসল যোগ্যরা সুযোগ পান না’, ২০১৪-য় টেটের প্রশ্ন ভুল মামলায় মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি মামলাকারী নেফাউর শেখকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ। 


আরও পড়ুন, কুণালের সঙ্গে বৈঠকে গলল বরফ! ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়ে আন্দোলন তুললেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ


 এ দিকে, হাইকোর্টের নির্দেশ, ‘৪ সপ্তাহের মধ্যে ইন্টারভিউ নিয়ে প্রাপ্ত নম্বর দিতে হবে’। ইন্টারভিউয়ে যোগ্য হলে চাকরি দিতে হবে, নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, ২০১৪ ও ২০১৭-র টেট ( TET 2014 , TET 2017 ) অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। ২১ জন অনুত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী ২০২২-এর প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। ওই চাকরিপ্রার্থীদের ফর্ম পূরণের অনুমতি দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।