ঋত্বিক প্রধান, মন্দারমণি: সামনে আদিগন্ত বঙ্গোপসাগর (Bay of Bengal)। তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গরিব মৎস্যজীবীদের (Fishermen) গ্রাম। দুইয়ের মাঝে কোনও গার্ডওয়াল নেই। ঘূর্ণিঝড় অশনির মেঘ মাথায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় ডুবেছে মন্দারমণির দাদনপাত্রবাড়। ফের বানভাসি হওয়ার আশঙ্কায় সেখানকার বাসিন্দারা। দ্রুত গার্ডওয়াল তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক।


ঘূর্ণিঝড় অশনির মেঘ মাথায় নিয়ে দুশ্চিন্তা: আয়লা, ফণী, আমফান, ইয়াস বিধ্বংসী ঝড়ে বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। তীব্র জলোচ্ছ্বাসে নদীবাঁধ ভেঙে প্রায় প্রতি বছর প্লাবিত হয় একই জায়গা। তারপরেও বছরের পর বছর একই আশঙ্কায় ভোগেন উপকূল এলাকার বাসিন্দারা। ঠিক যেমনটা দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমণি কোস্টাল থানার অন্তর্গত দাদনপাত্রবাড় এলাকায়। এখানে সমুদ্র আর গ্রামের মাঝে এখনও কোনও গার্ডওয়াল নেই।  বঙ্গোপসাগর একটু ফুলে ফেঁপে উঠলেই জল ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। 


গত বছর মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ঝাপটায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় দাদনপাত্রবাড় গ্রাম। ভেঙেছিল বহু ঘরবাড়ি। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল জীবনজীবিকার একমাত্র অবলম্বন মাছ ধরার নৌকা, জাল মুখোমুখি সমুদ্র আর গ্রাম। মাঝে নেই গার্ডওয়াল! কী সঙ্কেত বয়ে আনবে ‘অশনি’? দুশ্চিন্তায় দাদনপাত্রবাড় গ্রাম। দাদনপাত্রবাড় গ্রামের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “গত বছর বাড়িতে জল ঢুকেছিল। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি। বাড়ি ছেড়ে কোনও রকমে পালিয়েছিলাম। ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছিলাম।’’ ওই গ্রামেরই আরেক বাসিন্দা সুবল মণ্ডল বলেন, “এখানে গার্ডওয়াল নেই।  ইয়াসে সব ভেসে গিয়েছিল। উঁচু জায়গায় উঠে প্রাণ বাঁচিয়েছিলাম। এবারও তা হলে আরও সমস্যা। কারণ গত বছরের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারিনি।’’


ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব মোকাবিলায় দিঘা, মন্দারমণি উপকূলে প্রশাসনিক তৎপরতা যখন তুঙ্গে দাদনপাত্রবাড়ের বাসিন্দারা তখন ঘোর দুশ্চিন্তায়। এবারও যদি ঘরের দুয়োরে আছড়ে পড়ে সমুদ্র, কী হবে তখন! প্রকৃতির রুদ্ররোষ থেকে বাঁচতে গার্ডওয়াল তৈরির জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। সমস্যা মেটাতে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক। মৎস্যমন্ত্রী ও রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই কিছু এলাকায় ব্ল্যাক স্টোন ফেলেছি যেখানে সমুদ্র বাঁধের অবস্থা খারাপ। মন্দারমণির দাদনপাত্রবাড়ের জন্য মাস্টারপ্ল্যান নেওয়া হয়েছে। অতি শীঘ্র তা অনুসারে কাজ শুরু হবে।‘’


আরও পড়ুন: Durgapur : দুর্গাপুরের লেনিন সরণি হচ্ছে লতা মঙ্গেশকরের নামে ? চড়ছে রাজনৈতিক পারদ ; কী চাইছেন স্থানীয়রা ?