বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর : ফরে শিশু নিগ্রহের মতো নৃশংস ঘটনা উঠে আসল। এবার দশ মাসের শিশুকন্যাকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করার অভিযোগে বাড়ির পরিচারিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাবা মায়ের অনুপস্থিতিতে ছোট্ট বাচ্চাটির উপর নৃশংস অত্যাচার চালাতো অভিযুক্ত পরিচারিকা। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে হাড় হিম করা ছবি। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পাঁশকুড়া এলাকায়। 


আরও পড়ুন - East Midnapore: পূর্ব মেদিনীপুরে ভগবানপুরে জলে পড়ে মৃত্যু দেড় বছরের ঘুমন্ত শিশুর


জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore) জেলার পাবলিক হেলথের ডিসট্রিক্ট ম্যানেজার নবমিতা ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্বামী দেবাশীষ দাস পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। দেবাশীষ দাস পেশায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক। সূত্র অনুযায়ী যা জানা যাচ্ছে, গত ২০১৮ সাল থেকে ওই দম্পতির ফ্ল্যাটে পরিচারিকার কাজ করে আসছে স্থানীয় কল্পনা সেন নামে বছর পঞ্চাশের এক মহিলা। এর মাঝেই গত নভেম্বর মাসে একটি শিশুকন্যার জন্ম দেন নবমিতা ভট্টাচার্য। মেদিনীপুরের বাবার বাড়িতে থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে মে মাসে ফের ফ্ল্যাটে এসে ওঠেন তিনি। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক নবমিতার স্বামী দেবাশীষ প্রতি শনিবার করে ফ্ল্যাটে আসেন। কয়েকমাস আগে তাঁর চোখেই প্রথম অসংগতি ধরা পড়ে। পরিচারিকা কল্পনার আচরণে কিছু সন্দেহ দেখা দেওয়ায় কয়েক মাস আগেই ওই দম্পতি পরিচারিকার অলক্ষে নিজেদের ফ্ল্যাটে সিসিটিভি ক্যামেরা বসান। সিসিটিভি ক্যামেরার সঙ্গে নিজেদের ফোনের সংযোগ করিয়ে নেন তাঁরা। যাতে যেকোনও জায়গা থেকেই তা দেখতে পারেন।


আরও পড়ুন - East Medinipur : নৌকায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত ১, নিখোঁজ ১


ফ্ল্যাটে ফিরে আবার নিজের কাজে যোগ দেন নবমিতা। বাড়িতে পরিচারিকা কল্পনার দায়িত্বে শিশুকন্যাকে রেখে তিনি কাজে বেরিয়ে যেতেন। শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ নবমিতার স্বামী দেবাশীষ মেয়েকে দেখার জন্য বাঁকুড়া থেকে নিজের মোবাইলে অনলাইনে সিসিটিভি ফুটেজ দেখেন। সেই সময় দেবাশীষ দেখতে পান হাড় হিম করা দৃশ্য। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্ত পরিচারিকা তাঁর একরত্তি শিশুর উপর শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছে। কখনও ওই পরিচারিকা শিশুটির পা ধরে বিছানার উপর আছাড় মারছে। আবার কখনও শিশুটির শরীরে সজোরে আঘাত করছে। এমন দৃশ্য দেখার পরই দেবাশীষ বাবু তাঁর স্ত্রী নবমিতাকে পুরো ঘটনা জানান। কিন্তু সেই সময়ে নবমিতাদেবী কাজের জন্য কাঁথিতে ছিলেন। পরে দেবাশীষ বাবুও বাড়ি ফিরে আসেন। এরপরই পরিচারিকা কল্পনা সেনের নামে তাঁরা পাঁশকুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযুক্ত পরিচারিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজকে তাকে তমলুক আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।