বিটন চক্রবর্তী, নন্দীগ্রাম (পূর্ব মেদিনীপুর): ফের পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে সিবিআই। গত দুদিনের মত আজকেও নন্দীগ্রামের চিল্লগ্রামে যায় সিবিআইয়ের এক প্রতিনিধি দল। ৩  রা মে এই গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতিকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ১৩ই মে এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার তদন্ত করতে ফের আজকে চিল্লগ্রামে যায় সিবিআই। সেখানে স্থানীয় উপডাকঘরে বসে কাজকর্ম করেন সিবিআই আধিকারিকরা।


পাশাপাশি দেবব্রতর পরিবারের সদস্যদের আজকে সেখানে ডাকা হয়, তাদের সঙ্গেও কথা বলেন সিবিআই আধিকারিকরা। আজও দেবব্রতর বাড়ির সামনে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।


ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয়েছে  পুলিশ। গত মঙ্গলবার ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগের তদন্তে ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিল সিবিআই। পরিবার সূত্রে খবর, তখনই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়েছিলেন তাঁরা। মৃত বিজেপি কর্মীর  বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


সিবিআই তদন্তে যাওয়ার পরেই পুলিশি নিরাপত্তা পেয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবার।বাড়ির সামনে এখন পাহারা দিচ্ছে পুলিশ।


গত ৩ মে, বিধানসভা ভোটের ফল বেরনোর পরের দিন নন্দীগ্রামের চিল্লগ্রামে বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ ওঠে। ১৩ মে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। 


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগের তদন্তে গত মঙ্গলবার দেবব্রত মজুমদারের বাড়িতে যায় সিবিআইI। 
সূত্রের খবর, সিবিআই অভিযুক্তদের নাম জানতে চাইলে, দেবব্রত মাইতির পরিবার তা বলতে অস্বীকার করে।


কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তার কারণ জিজ্ঞাসা করলে, পরিবারের তরফে বলা হয়, সিবিআই কয়েক দিন পর চলে যাবে। তারপর তাঁদের কী হবে? যাদের নাম বলা হবে, তারাই এসে আবার ক্ষতি করবে। 


সূত্রের খবর, সিবিআই আধিকারিকরা পরিবারের সদস্যদের বলেন, নির্ভয়ে অভিযুক্তদের নাম বলুন। আপনাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। 


এরপরই মৃত বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতির বাড়ির সামনে পুলিশ পাহারা বসানো হয়। 


মৃত বিজেপি কর্মীর পুত্রবধূ হৈমন্তী মণ্ডল মাইতি বলেন,  নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। সিবিআইকে সেকথা জানিয়েছিলাম। তারপরই দেখলাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, কিছুটা স্বস্তিতে আমরা। ভয় কিছুটা কমেছে। 


বিজেপি কর্মীর বাড়ির সামনে এই পুলিশ মোতায়েন ঘিরেও শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেছিলেন, এ রাজ্যে আইনের শাসন নেই, শাসকের আইন আছে। রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাস চলছে। দেবব্রতর পরিবার এই পরিস্থিতিতে কিছু বললে তাঁদের ওপর আক্রমণ হতে পারে। তাই হয়তো সিবিআই তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করেছে।


নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বদেশ দাস বলেছিলেন, কী কারণে পুলিশ পোস্টিং জানিনা। নন্দীগ্রামে বিজেপিই সন্ত্রাস করছে।


ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় সিবিআই তদন্ত ঘিরে রাজনীতির পারদ প্রতিদিনই যেন বাড়ছে।