বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: সরকারি জমি থেকে বেআইনিভাবে গাছ কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই শিবিরের ভিন্নমত প্রকাশ্যে! পঞ্চায়েতের প্রধানের নির্দেশেই কাটা হয়েছে গাছ, অভিযোগ তৃণমূলের ব্লক সভাপতির! যা অস্বীকার করেছেন দলেরই পঞ্চায়েত প্রধান। আর এ নিয়ে কটাক্ষের সুর বিজেপির গলায়!
বনসৃজন প্রকল্পে এখানেই পোঁতা হয়েছিল একের পর এক গাছ। কিন্তু তার মধ্যে প্রায় সাত-আটটি গাছ কেটে নেওয়ার দাগ স্পষ্ট! নন্দীগ্রামের এ ছবি সামনে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
তৃণমূল পরিচালিত দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শামসুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫ জানুয়ারি শেখ সফি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে হলদিয়া মহকুমা আদালত। এরপর এ নিয়ে শাসকদলের অন্দরেই শুরু হয়েছে তরজা।
দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য এবং কয়েকজন এলাকাবাসীর অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানের নির্দেশে সরকারি জমি থেকে গাছ কাটা হয়েছে। আর এখন এক নিরপরাধ ব্যক্তিকে ফাঁসানো হচ্ছে। এ নিয়ে নন্দীগ্রাম থানা ও বিডিও অফিসে অভিযোগও জমা পড়েছে।
দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আব্বাস বেগ জানিয়েছেন, প্রধান ও এক সদস্য মিলে এ কাজ করেছে। একটা নিরীহ লোককে গ্রেফতার করিয়ে দিল।
কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে কেন মুখ খুললেন দলেরই পঞ্চায়েত সদস্য? স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত প্রধান শামসুল ইসলাম নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহেরের অনুগামী বলে পরিচিত। আবু তাহেরের সঙ্গে নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাসের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ।
আর যাঁরা পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, তাঁরা ব্লক সভাপতির অনুগামী।নন্দীগ্রাম ১ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাসের কথায়, ওই প্রধানই এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা এর আগেও ওর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে।
দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শামসুল ইসলামের দাবি, মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। শাসকদলের অন্দরে ভিন্নমত উঠে আসায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
পুলিশ জানিয়েছে, গাছ কাটার ঘটনায় একজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কেউ এর সঙ্গে জড়িত কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।