সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে হাইকোর্টে ধাক্কা কালীঘাটের কাকুর। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে পারবে ED। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আবেদন খারিজ করে, অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট এই ধরনের মামলায় কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি, সেখানে এখনই কলকাতা হাইকোর্ট কীকরে নমুনা সংগ্রহে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেবে?
এখনই এই মামলায় কোনও নির্দেশ দিলে, তা গোটা তদন্ত প্রক্রিয়াকে ব্য়াহত করবে। বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য় করেন, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। গত শুক্রবার, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার জন্য় ইডিকে ছাড়পত্র দেয় ব্য়াঙ্কশাল আদালত।
ই়ডির তরফে দাবি করা হয়, গত ২০-ই ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা ৪৬ মিনিটে নিজের মোবাইল ফোন থেকে কাউকে ফোন করে সুজয়কৃষ্ণ নির্দেশ দিয়েছিলেন, ফোনের যাবতীয় তথ্য়, চাকরিপ্রার্থীদের মার্কশিট, অ্য়াডমিট কার্ড ডিলিট করে দিতে।
তাই তদন্তের স্বার্থে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা প্রয়োজন। তারই প্রেক্ষিতে ইডিকে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার অনুমতি দেন ব্য়াঙ্কশাল কোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্য়ালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। কিন্তু সেখানেও ধাক্কা। কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের মামলায় এখনই কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিতে নারাজ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
তিনি বলেন, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে ED। যদিও নিম্ন আদালতে ট্রায়ালের সময় এই কণ্ঠস্বরের নমুনা, প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে কিনা, তা নির্ভর করবে হাইকোর্টের রায়ের ওপর। এ নিয়ে, পূর্ণাঙ্গ শুনানির পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। ১৮ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি।
অন্যদিকে চাকরির বিক্রির টাকা কালীঘাটের কাকু, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থার মাধ্যমে প্রোমোটিং ব্যবসায় লগ্নি করা হয়েছিল কিনা তা জানতে ২টি নির্মাণ সংস্থার ৩টি অফিস আপার উড স্ট্রিট, এজেসি বোস রোড ও প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে গতকাল প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালায় ইডি। তল্লাশির পর কেন্দ্রীয় এজেন্সির চাঞ্চল্যকর দাবি, শেয়ার ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে নির্মাণ সংস্থার কাছে টাকা পৌঁছে যেত।
কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থা ওয়েলথ্ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেডের অ্য়াকাউন্ট থেকে নির্মাণ সংস্থার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে, এমন তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলে ইডি-র দাবি। সূত্রের খবর, গতকাল ম্যারাথন তল্লাশিতে শেয়ার ট্রেডিং সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি ছাড়াও ২২০০ পাতার নথি, প্রচুর ডিজিটাল এভিডেন্স ও কালীঘাটের কাকুর নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থার অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে।