কলকাতা: রেশন দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে আরও ৪টি নতুন কোম্পানির হদিশ পেল ED। সূত্রের খবর, মায়াপুর মার্চেন্ডাইস প্রাইভেট লিমিটেড, হার্মেস ভয়েজেস প্রাইভেট লিমিটেড, প্রিমিয়ার স্পোর্টস ট্যুরিজম প্রাইভেট লিমিটেড ও আনন্দ ট্রেড কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড--এর মধ্যে ৩টি কোম্পানির ঠিকানা এক, কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোড, আর চতুর্থ কোম্পানির ঠিকানা হাওড়ার ব্যাঁটরা।


ED-র দাবি, এই ৪টি কোম্পানিরই ডিরেক্টর পদে নাম রয়েছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী সুকন্যা দাসের। কী কারণে মন্ত্রীর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক চার-চারটি কোম্পানি খুলে ফেললেন, এই কোম্পানিগুলির কাজ কী ছিল, কাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল এবং টাকা লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখছে ED। এই কোম্পানিগুলির মাধ্যমেও কী রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে? জানতে এবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজরে নতুন ৪টি কোম্পানি। 


রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় ইডি-র হাতে একের পর এক গ্রেফতারি এবং চাঞ্চল্য়কর সব তথ্য় উঠে আসার পর অবশেষে নড়েচড়ে বসল রাজ্য় সরকার। খাদ্য় দফতরের পোর্টালে, এবার বাকিবুর রহমানের সংস্থা। NPG রাইসমিল প্রাইভেট লিমিটেডকে হোল্ড করা হল। রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায়। ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার হন ব্য়বসায়ী বাকিবুর রহমান। আর ২৭ অক্টোবর ইডি গ্রেফতার করে প্রাক্তন খাদ্য়মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিককে।


ইডি সূত্রে দাবি, এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে, তাঁরা বাকিবুর রহমানের পাহাড় প্রমাণ সম্পত্তির কথা জানতে পারেন। যার মধ্য়ে ছিল তাঁর একাধিক সংস্থাও। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, ৬টি এমন সংস্থার কথা জানা যায়, যেখানে আটা বণ্টন দুর্নীতির টাকা ঢুকেছিল। এর মধ্য়ে একটি সংস্থা ছিল NPG রাইসমিল প্রাইভেট লিমিটেড। এই সংস্থায় ১০ কোটি ৩০ লক্ষ ৯৭ হাজার ১০০ টাকা ঢুকেছিল বলে তদন্তে জানা যায়। সূত্রের খবর, জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর খাদ্য় দফতরের পোর্টালে এই সংস্থাকে হোল্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। 


আরও পড়ুন, গঙ্গাজলঘাটিতে BJP নেতাকে 'খুন' ? কাদের কাঠগড়ায় তুললেন শুভেন্দু ?


নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য় সরকারের তরফে এই চালকলগুলিতে ধান পাঠানো হয়। তারপর এই চালকলগুলি থেকে রাজ্য় সরকার ধান নেয়। সূত্রের খবর,হোল্ড করার অর্থ এই চালকলগুলিতে রাজ্য় সরকার আর ধান পাঠাবে না। বছর তিনেক আগে রেশন বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে মামলা করেছিল পুলিশও। ২০২০, ২১ ও ২২ সালে নদিয়ার ধুবুলিয়া, কোতোয়ালি ও নবদ্বীপ থানায় তিনটে FIR করে পুলিশ।২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, নদিয়ার কোতোয়ালি থানায় FIR দায়ের হয়। সেই FIR-এর ভিত্তিতেই ২০২২ সালে ED ECIR দায়ের করে। কিন্তু, পুলিশের তদন্তে এই দুর্নীতি সামনে আসেনি কেন? এনিয়ে নড়েচড়ে বসতে এতদিন লাগল কেন? এখন ইডি জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর এই ব্য়বস্থা কি মুখ বাঁচাতে? সেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।