প্রকাশ সিনহা, সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: কলকাতায় ফের যকের ধনের হদিশ! কয়লাকাণ্ডে (coal scam) বালিগঞ্জে নির্মাণকারী সংস্থার (ballygunge construction office) অফিসে বুধবার ইডির ১০ ঘণ্টা তল্লাশি (ED Raid) অভিযান। প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা (crores of money recovered) বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এত টাকা নগদ অফিসে রাখা হয়েছিল কেন? প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ইডি। কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা ? সন্দেহ গোয়েন্দাদের। অফিস থেকে একটি ডেস্কটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ডেস্কটপের ভিতরে কী আছে? নজর ইডির।


কী ঘটেছিল?
হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগে, যেদিন পতাকা ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডের হেড অফিস-সহ ৮টি জায়গায় তল্লাশি চালাল আয়কর দফতর সেদিনই, বালিগঞ্জের নির্মাণকারী সংস্থা গজরাজ গ্রুপের অফিস থেকে কোটি টাকারও বেশি উদ্ধার করল আরেক কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচারের পর, এবার কয়লাকাণ্ডে মিলল কোটি টাকার হদিশ। উদ্ধার হওয়া টাকার বান্ডিলে সবই ৫০০-র নোট! কোথা থেকে এল এত টাকা? কেন বান্ডিল বান্ডিল টাকা রাখা হয়েছিল? নেপথ্যে কী কারণ? ইডি সূত্রে দাবি, বুধবার সকাল থেকেই, বালিগঞ্জের গড়চায় নির্মাণকারী সংস্থা গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টর বিক্রম শিকারিয়ার অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। এখানেই রয়েছে, গজরাজ গ্রুপের একাধিক কোম্পানির অফিস। সূত্রের দাবি, তল্লাশিতে দেড় কোটির কাছাকাছি টাকা উদ্ধার হয়েছে। সূত্রের আরও দাবি, কয়লাকাণ্ডের তদন্তে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হয়। বয়ান নেওয়া হয় সাক্ষীদের। সেই সূত্রেই জানা যায়, আসানসোল এবং পুরুলিয়া থেকে কয়লা পাচারকারীদের টাকা হাত বদল হয়ে এই নির্মাণকারী সংস্থার মাধ্যমে বাজারে খাটানোর চেষ্টা হচ্ছে। এভাবে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা হচ্ছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এই তথ্য পাওয়ার পরই, দিল্লি থেকে কলকাতায় আসেন ইডির কয়েকজন অফিসার। কলকাতার ইডির জোন-টুর অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে এদিন সকালে গজরাজ গ্রুপের এই অফিসে তাঁরা পৌঁছে যান।


যা উঠে এল..
সূত্রের দাবি, বিক্রম শিকারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, মিস্টার গ্রেওয়াল বলে একজনের নাম উঠে আসছে। ইডি সূত্রে দাবি, শরৎ বোস রোডের একটি ধাবার সূত্রে মিস্টার গ্রেওয়ালের কাছে টাকা আসে। পরে, সেই টাকা এসে পৌঁছয় বালিগঞ্জের গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টরের হাতে। সংস্থার অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে, কোনও প্রভাবশালীর টাকা খাটানো হত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত যা জানা যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট, বিক্রম শিকারিয়া রিয়েল এস্টেট, ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট সহ প্রায় ৩০টি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। তিনি কোনও সংস্থার ডিরেক্টর, আবার কোনও সংস্থার অতিরিক্ত ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। ২০০৫ সালে, ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট ব্যবসা দিয়ে তাঁর হাতেখড়ি হয়। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর রিয়েল এস্টেটের প্রোজেক্ট। এর আগে নিয়োদ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের ফ্ল্য়াট থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদ ৫০ কোটি! তার পর গার্ডেনরিচেও ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধার হয়। এতেই থামেনি নগদ উদ্ধারের ঘটনা। এবার ফের কলকাতার বুকেই, ইডি তল্লাশিতে মিলল টাকার পাহাড়!


আরও পড়ুন:গায়েব ঠান্ডা, কেমন থাকবে মহানগরের হাওয়া বাতাস?