নয়াদিল্লি: অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে ও হিসাবরক্ষককে দিল্লিতে তলব ইডির। বুধবার অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাকে দিল্লিতে তলব। মঙ্গলবার অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে তলব করল ইডি। সূত্রের খবর, 'অনুব্রতর মুখোমুখি বসানো হবে সুকন্যা ও মণীশকে। সুকন্যা ও মণীশের আগের বয়ান সামনে রেখে করা হবে জিজ্ঞাসাবাদ।
মেয়ে বলেছেন, বাবা সব জানেন। আর বাবা বলছেন, কিছু মনে নেই। কে ঠিক বলছেন? সত্যিটা কী? উত্তর পেতে এবং গরুপাচার মামলার তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুব্রত মণ্ডলের মুখোমুখি বসিয়ে তাঁর মেয়ে সুকন্য়াসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। সূত্রের খবর, শনিবারই ফোন করা হয় সুকন্য়া ও অনুব্রতর হিসেবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে। ইডি সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে তাঁদের কোনও কাজ রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। যে কোনওদিন দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে যেতে হবে তাঁদের। কবে যেতে হবে, তা একদিন আগে জানিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে, শনিবার দফায় দফায় জেরা করা হয় অনুব্রতকে। সূত্রের খবর, সোম-মঙ্গলও জেরা করা হবে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ। রাইস মিল, বিপুল সম্পত্তি, কোটি কোটি টাকার লেনদেন, সুকন্য়ার নামে ৩টি ফিক্সড ডিপোজিট, এ সমস্ত কিছু নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ED সূত্রে খবর, প্রয়োজনে, অনুব্রত, তাঁর কন্য়া সুকন্য়া ও হিসেব রক্ষক মণীশ কোঠারি, তিনজনকে একসঙ্গে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
১১ দিনের হেফাজত, ১২ জনকে দিল্লি তলব, এবার মুখোমুখি বসানোর পালা। শুক্রে জোড়া সক্রিয় ED। অনুব্রত মণ্ডল ফের দিল্লিতে আদালতে পেশ হলেন! ম্য়াকডোনাল্ডস থেকে ED-র আনানো খাবার খেলেন! কিন্তু, তাঁর আইনজীবীর কোনও সওয়াল আদালতে টিকলনা। দোলযাত্রার দিন দিল্লিযাত্রার পর রাজধানীতে কি এবার মুখোমুখি জেরা বাবা-মেয়েকে? গরু পাচারকাণ্ডে এবার সেই পথেই এগোচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট! ৩ দিনের হেফাজত শেষে এদিন অনুব্রত মণ্ডলকে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে পেশ করে ইডি। আদালতে ঢোকার পর এজলাসে পিছনের দিকে বসেন অনুব্রত। শুনানির শুরুতে অনুব্রতকে ১১ দিন হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেন ইডি-র আইনজীবী।
রিরোধিতা করে অনুব্রতর আইনজীবী বলেন, তিন দিনের হেফাজতে তো কোনও কিছুই বেরোয়নি। মাত্র ২ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে। ইডি-র আইনজীবী তখন বলেন, অনুব্রতকে যাতে দিল্লি না আনা যায়, বা ইডি যাতে হেফাজতে নিতে না পারে তার জন্য অযথা সময় নস্ট করেছেন তিনি। ভাষা নিয়ে সমস্যা হওয়ায় হোলির দিন জেরা করা যায়নি। উনি হিন্দি বা ইংরেজি জানেন না। বাংলাতেও লিখতে পারছেন না। একদিন মাত্র জেরা করা সম্ভব হয়েছে। সেখান থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। আরও কিছু তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাঁকে জেরা করতে হবে। একজন ট্রান্সলেটর ও বাংলা লেখক জোগাড় করা হয়েছে। অনুব্রতর মেয়ে আগে জানিয়েছেন, সব লেনদেনের কথা বাবা এবং হিসেবরক্ষক জানেন, তাঁরাই বলতে পারবেন। অন্যদিকে অনুব্রত বলছেন, তাঁর কিছু মনে পড়ছে না। তাই অনুব্রতর মেয়ে, হিসেব রক্ষক সহ আরও ১২ জনকে তলব করা হয়েছে। আগামী ১১ দিনে তাঁদেরকে অনুব্রত মণ্ডলের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এরপর অনুব্রতর কাছে বিচারক জানতে, আপনি হিন্দি বা ইংরেজি জানেন? বলতে বা লিখতে পারেন? মাথা নেড়ে না বলেন অনুব্রত। অনুব্রতর আইনজীবীকে বিচারক বলেন, আপনার মক্কেলকে জিজ্ঞেস করুন, উনি কিছু বলতে চান কিনা। অনুব্রতর সঙ্গে কথা বলে আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল কিছু বলতে চান না। বিচারক জানতে চান, মেডিক্যাল রিপোর্ট কী বলছে, সব ঠিক আছে? ঠিক আছে বলে জানান অনুব্রতর আইনজীবী।