কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা মহলে। কারও আশঙ্কা, এতে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের পথ প্রশস্ত হল। কেউ এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করেছেন।
কী প্রতিক্রিয়া শিক্ষামহলে? আর রাজ্যপাল নন, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার জন্য তোড়জোড় শুরু করল সরকার। রাজ্য মন্ত্রিসভার ছাড়পত্রের পরে দ্রুত বিধানসভায় বিল আনতে চলেছে সরকার। কিন্তু, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিপূর্ণ? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর মতে, “মুখ্যমন্ত্রী তো পলিটিক্যাল লোক? ভাইস চ্যান্সেলর তো পলিটিক্যাল লোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। উপাচার্যদের ভাবমূর্তি খারাপ হবে কারণ দলদাস ভাববে লোকে। মুখ্যমন্ত্রী তো প্রচুর ব্যস্ত, এত অ্যাকাডেমিক বিষয়ে ভিতরে ঢুকে কী ভাবে করবেন?’’
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “যে নতুন ব্যবস্থা আসবে, সেটা রাজ্যের উচ্চশিক্ষার জন্য কতটা মঙ্গলজনক হবে, সেটা ভবিষ্যতই বলবে। বিরাট সংশয়ের বিষয়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ভাল পদক্ষেপ হবে বলে মনে হয় না।’’ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন উপাচার্য শুভঙ্কর চক্রবর্তী মতে, “এমনিতে দুর্নীতি চারপাশে। তার প্রভাব পড়বে। আমি এই সিদ্ধান্ত হতাশ ও আতঙ্কিত।’’ যদিও শিক্ষামহলের একাংশ এই আশঙ্কা বা দাবির সঙ্গে এক মত নয়। শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির মতে, “রাজ্যপাল বাধা দিচ্ছেন প্রতি পদে, তাই সমর্থন জানাচ্ছি, ইউজিসি কী গ্রান্ট দেয়, ওদের গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই।’’
রাজ্য সরকার যে এই পথে হাঁটতে পারে, গত ডিসেম্বরেই সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “রাজ্য মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিক্রমে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গের যত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে তার আচার্য পদে মন্ত্রিসভা রাজ্যপালের পরিবর্তে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম আচার্য হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে। এটা এরপর বিধানসভায় যাবে। তারপর আইন হিসেবে পরিণত হবে।’’
আরও পড়ুন: Chancellor of University: রাজ্যপাল আর নয়, আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী, অনুমোদন মন্ত্রিসভায়