উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, আশাবুল হোসেন ও সমীরণ পাল, কলকাতা : ১২টি রাজ্যের মুখ্য় নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। সূত্রের দাবি, বৈঠকে BLO-দের নিয়ে কড়া বার্তা দেন তিনি। এদিকে, সোমবার ফের BLO-দের হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

Continues below advertisement

সোমবারই SIR হচ্ছে, এমন ১২টি রাজ্যের মুখ্য় নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে BLO-দের নিয়ে কড়া বার্তা দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। সূত্রের দাবি তিনি বলেন, মৃত, স্থানান্তরিত এবং ভুয়ো ভোটারের নাম কোনওভাবে এলে আত্মীয় বা যিনি সই করেছেন তার দায়িত্ব বলেই ধরা হবে। BLO যেহেতু 'ভেরিফায়েড' বলে সই করবেন, সেক্ষেত্রে তিনিও দোষী।

'SIR'-এর পর এ বিষয় কড়া পদক্ষেপ নেবে কমিশন। ফলে, কার্যত শাঁখের করাতের নিচে BLO-রা। একদিকে কাজের চাপ, অন্যদিকে তৃণমূল-বিজেপি-নির্বাচন কমিশনের লাগাতার হুঁশিয়ারি। এ প্রসঙ্গে এর আগে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেছিলেন, "এটা মনে রাখবেন আপনারা চাকরি করেন রাজ্য সরকারের। কোনও মানুষকে অযথা হেনস্থা করবেন না।" 

Continues below advertisement

বারবার BLO-দের হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারীও। তাঁর কথায়, "আপনারা যদি ভাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ পন্থ আর একশ্রেণির চটিচাটা DM-রা আপনাদের বাঁচাবে, ওসব হবে না। নির্বাচন কমিশন যেমন সজাগ আছে, বিজেপি এবার প্রত্যেকটি ব্লক-বুথে...। আমি সতর্ক করে দিচ্ছি, বিহারে ৫২ জন লোক এখনও জেলে আছে। দয়া করে এগুলো করবেন না।"

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "বেশকিছু BLO-র সমস্যা হচ্ছে। সেগুলি ন্যায্য। তার কারণ, জাতীয় নির্বাচন কমিশন যথাযথ প্রস্তুতি এবং সময় না দিয়ে একটা হটকারী, অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএলওদের নামিয়েছে। ঠিকমতো ফর্মগুলো সাপ্লাই দিতে পারেনি।" 

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "বিএলওরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। নির্বাচন কমিশন সময় দেয়নি। তৃণমূল জবরদস্তি করে বিএলওরা তাদের মতো করে চলুক তার ব্যবস্থা করতে চায় এবং দাপট দেখাতে চায়। বিজেপি প্রতিদিন ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে,জেলে দেব, ওই সরব,সেই করব...চিঁড়েচ্যাপ্টা করা হচ্ছে বিএলওদের এবং যেন বিএলওদের কোনও অধিকার নেই, এরকম মনোভাবে চলা হচ্ছে...বিএলওদের বহু কথার সঙ্গে আমরা একমত।"             

BLO-দের একাংশের বিরুদ্ধে এদিন বিস্ফোরক অভিযোগও করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, "ECI এবং CEO অফিসে দাবি করেছি, অবিলম্বে হেল্পলাইন নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর জনগণের জন্য যাদের ইচ্ছাকৃতভাবে বা রাজনৈতিক কারণে বিএলওরা ফর্ম দেননি, এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেকটা বিডিও অফিসে বেলা ২টোর সময় আইপ্যাকেরা লোকেরা বিডিওদের সঙ্গে বসে মিটিং করছেন। আমাদের কাছে ভিডিও, ছবি আছে। আমরা যথাসময়ে নির্বাচন কমিশনের যে দল আসছে তাদের কাছে শিশির বাজোরিয়া টাইম চেয়েছেন। যদি সময় দেন আমরা অভিযোগ করব।" কুণাল ঘোষ বলছেন, "বহু বিএলও সমস্যায় পড়ছেন।"   

৪ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে SIR। এনুমারেশন ফর্ম পূরণের কাজ চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তারপর ৯ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা।