অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলে পাতা তুলতে গিয়ে হাতির আক্রমণে (Elephant Attack) মৃত্যু হল এক মহিলার (woman dies)। রবিবার দুপুরের ঘটনা। ঘটনাটি ঘটেছে নয়াগ্ৰাম থানার নিগুইয়ের জঙ্গলে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম দৈমন্তি মাহাতো। বয়স ২৪ বছর। তাঁর বাড়ি নয়াগ্ৰাম থানার বড়নিগুই গ্রামে।
নতুন নয়...
চলতি মাসের গোড়াতেই একেবারে প্রকাশ্য দিবালোকেই তাণ্ডব চালায় হাতির দল। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে তারা। ফসল তো বটেই, ঘরবাড়িরও ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি বন দফতরকে জানানো হয়েছিল। বন দফতরের পক্ষ থেকে ওই এলাকার গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে বনদফতরের কর্মীরা হাতির দলের গতিবিধির উপর নজরদারি শুরু করে। তা সত্ত্বেও ওই এলাকার বাসিন্দারা হাতির হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান। পশ্চিমের এই জেলায় হাতির তাণ্ডব অবশ্য একেবারে অজানা কিছু নয়। মাঝেমধ্যেই তাদের দাপটে ফসলের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়। গত বছর জুলাইয়ে যেমন একই ঘটনা ঘটেছিল ঝাড়গ্রাম ব্লকে। পাশাপাশি ঝাড়গ্রামে হাতির হানায় প্রাণহানির ঘটনা একেবারে নতুন নয়। গত বছর অগাস্ট মাসে চারজনের মৃত্যুতে ঝাড়গ্রামে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবাদে ঘটনার দিন সকালে ঝাড়গ্রাম-জামবনি রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, বন প্রতিমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ঘটনা ঘটলেও তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি। প্রতিক্রিয়া জানতে মন্ত্রীকে ফোন করা হলেও তাঁর ফোন ছিল সুইচড অফ। সব মিলিয়ে হাতির আতঙ্কে ঘুম ছুটে যায় ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দাদের। বস্তুত, সেই সময় পর পর দুদিন হাতির হানায় মৃত্যু হয় ৪ জনের । এই ভাবে হাতির তাণ্ডবে প্রাণহানি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঝাড়গ্রাম-জামবনি রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে দাবি, ঝাড়গ্রামের তৃণমূল বিধায়ক ও বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার বাড়ির কাছে বুধবার ২টি পূর্ণবয়স্ক হাতি ও একটি হস্তিশাবক হানা দিয়েছিল। চারজনকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় দেয় দু’টি হাতি। মৃত্যু হয় ২ জনের। সেখান থেকে তাড়া খেয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চলে আসে তিনটি হাতি। সেখানে হাতির হানায় মৃত্যু হয় এক মহিলার। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আহত একজনের। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাতির হানায় পরপর মৃত্যুর পরও ঘটনাস্থলে আসেননি বন প্রতিমন্ত্রী। স্থানীয়দের ক্ষোভ ছিল, 'হাতির হামলা প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রী বলেন দুয়ারে দুয়ারে যাবেন। উনি দুয়ারে আসছেন না। হাতি দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে। বন আধিকারিক ফোন ধরেননি না। বন প্রতিমন্ত্রী ঘটনাস্থলে আসেন না'।