কলকাতা: কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রে তৃতীয় জোটের জল্পনা উস্কে দিয়েছেন আগেই। একবার ফের চাঁচাছোলা ভাষায় কংগ্রেস তথা রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) আক্রমণ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সরাসরি রাহুলকে নিশানা করেছেন মমতা। তিনি নন, কংগ্রেসই বিজেপি-র সামনে মাথা নত করেছে বলে দাবি মমতার। তাঁর এই মন্তব্যে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী ঐক্যের সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল (Lok Sabha elections 2024)।


সরাসরি রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের


সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। সেই ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা করতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। আর সেখানেই রাহুলকে নিশানা করেন তিনি। মমতা বলেন, "রাহুল গান্ধী যতদিন থাকবেন, মোদিকে কেউ খারাপ ভাববে না। সেই জন্য রাহুলকে নেতা বানানোর চেষ্টা বিজেপি-র।" সাগরদিঘি উপনির্বাচন নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকেও আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, "আমি দিল্লিতে তোমার সঙ্গে দোস্তি করব, আর এখানে তুমি বিজেপির সঙ্গে মস্তি করবে!" এমন মন্তব্য করে মমতা আসলে অধীরের মাধ্যমে কংগ্রেসকেই বার্তা দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।


২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বাংলায় তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরই বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর চেষ্টা করেছিলেন মমতা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সটান দিল্লিতে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে দফায় দফায় সনিয়া গান্ধী, রাহুল, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদবের সঙ্গে সাক্ষাৎ পরেন। পরে এমকে স্ট্যালিন, কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। কিন্তু মমতা জোটের প্রশ্নে নিজে থেকে এগিয়ে গেলেও, সময় থাকতে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার কথা বললেও, গান্ধীদের তরফে সে ভাবে সাড়া মেলেনি বলে জানা যায়। 


আরও পড়ুন: Jitendra Tiwari: কোর্টে নিজের হয়েই সওয়াল জিতেন্দ্রর, চাইলেন দু’দিনের হেফাজতও, হুঁশিয়ারি তৃণমূলকে


তার পর থেকেই লাগাতার কংগ্রেসকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। কখনও মমতা খোদ সরব হয়েছেন, কখনও আবার অভিষেক। এ বারও কোনও রকম রাঢাক না করে রাহুলকেই সরাসরি নিশানা করলেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, "আমি বিজেপির কাছে মাথানত করিনি। মাথানত করেছে কংগ্রেস।" সাগরদিঘিতে তৃণমূলকে হারাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর খোদ বাম এমনকি বিজেপি-র সাহায্য় নেন বলে আগেও অভিযোগ করেন মমতা। তাঁদের এই জোট 'অনৈতিক', এর পর আর কংগ্রেসের নিজেদের বিরোধী বলা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন। একবার ফের সরব হলেন তিনি। 


রাহুলের নাম মুখে আনায় বিষয়টি জাতীয় স্তরেও পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে


তবে সরাসরি রাহুলের নাম মুখে আনায় বিষয়টি জাতীয় স্তরেও পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এর আগে, গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে সংঘাত বাধে। সেই নিয়ে রাহুলও রাখঢাক করেননি। বিজেপি-কে সুবিধা করে দিতে তৃণমূল একের পর এক রাজ্যে কংগ্রেসের ভোট কাটছে বলে অভিযোগ করেন। তার পরই রাহুলকে নিশানা করলেন মমতা। বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দিতে কংগ্রেস আদৌ সক্ষম কিনা, আগেও সেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলও। এ দিনও রাহুলকে নেতা বানানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে ফের কংগ্রেস সাংসদের রাজনৈতিক যোগ্যতা নিয়েই মমতা প্রশ্ন তুললেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।