অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: ফের হাতির হানায় মর্মান্তিক মৃত্যু ঝাড়গ্রামে এক বৃদ্ধার (Jhargram Elephant Attack)। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম কোকিলা মাহাতো। বয়স ৭০ বছর। বৃহস্পতিবার গভীর রাত পেরিয়ে, ভোরের দিকে ঘটনাটি ঘটেছে বলে খবর। 


কী জানা গেল?
রাত তখন ৩টে। বৃ্দ্ধাকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে এনে পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলেছে হাতিটি, আপাতত এমনই জানাচ্ছে  প্রশাসন। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই সেখানে পুলিশকে নিয়ে পৌঁছে যান বন দফতরের আধিকারিকরা। ঝাড়গ্রামে হাতির হানায় মৃত্যু মোটেও বিরল ঘটনা নয়। এই ভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বেঁচে থাকায় অত্যন্ত বিরক্ত এলাকাবাসী। আজকের পর তাঁদের দাবি, বনপ্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে ঘটনাস্থলে আসতে হবে। হাতি তাড়াতে বন দফতর কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা ঝাড়গ্রামের মানুষকে লিখিত আকারে জানাতে হবে তাঁকে, বলছেন এলাকাবাসীরা। শুধু তাই নয়। মৃতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণেরও ব্যবস্থা করুক প্রশাসন, চাইছেন এলাকার মানুষ। যত ক্ষণ না পর্যন্ত বন দফতর তাদের দাবি মানছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা দেহ উদ্ধার করতে দেবেন না, সাফ জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। 


বার বার তাণ্ডব...
গত মে মাসের ঘটনার কথাই ধরা যাক। হাতির তাণ্ডবে আতঙ্কে সিঁটিয়ে ছিলেন ঝাড়গ্রামের মানুষ। নির্দিষ্ট করে বললে, সে বার বালিভাষা ও মোহনপুরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে দাপিয়ে বেড়ায় ৬০-৭০টি হাতির দল। চাষের জমিতে নেমে ফসল নষ্ট করে। রাতের আঁধারে সাঁকরাইলের হাঁড়িভাঙা গ্রামে হানা দিয়েছিল হাতির দল। বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট করে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। ঝাড়গ্রামে মাঝেমধ্যেই হাতির তাণ্ডব দেখা যায়। এই নিয়ে বন দফতর ও এই জেলার বাসিন্দা বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার ভূমিকায় গ্রামবাসীরা যে ক্ষুব্ধ, সেটা তখনও বোঝা যায় । কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেনেও তারা নির্বিকার বলে অভিযোগ। বন দফতরের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এই ঘটনার দিনকয়েক আগে ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলের বটডাঙ্গা গ্রামে ৭০ থেকে ৮০টি হাতির তাণ্ডব দেখা যায়। নাজেহাল হন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িঘর ভাঙচুর, ফসল নষ্ট থেকে লাগাতার মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এই জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়, প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হাতি উপদ্রবের জেরে বাঁকুড়ার জঙ্গল লাগোয়া তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্রকে বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত করে বন দফতর। এই তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল বড়জোড়া হাইস্কুল, বেলিয়াতোড় হাইস্কুল ও গদারডিহি হাইস্কুল। সূত্রের খবর, যথেষ্ট সংখ্যক হুলা পার্টি মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি এই প্রথম জঙ্গল লাগোয়া ২০টি গ্রাম থেকে শতাধিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া আসার ব্যবস্থা করে বন দফতর। 


আরও পড়ুন:কেষ্টপুর বাসিন্দার ফ্ল্য়াটে ২ কোটি ! বিহার থেকে কলকাতায় এসে খুঁজে বের করল ED