অর্ণব মুখোপাধ্যায়, অযোধ্যা:  অযোধ্যায় ( Ayodhya ) সরযূ নদীর তীরে জন্ম নেওয়া রাম যতটা উত্তর ভারতের, কৃত্তিবাস ওঝার রাম  কিন্তু অনেকটাই আলাদা। তিনি যেন এক বাঙালি পরিবারের বড় ছেলের রূপ। এই রাম বাংলার বড় কাছের। বাঙালি রামের চেহারাও কল্পনা করে নেয় নিজেদের মতো করে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের সঙ্গে বাঙালির সেন্টিমেন্ট কতটা জড়িয়ে তা নিয়ে নানা মহলের নানা মত থাকলেও, সরযূর তীরে আগামী ২২ তারিখ যে রাজসূয় আয়োজন হতে চলেছে, তাতে রয়েছে বং কানেকশন। 


অযোধ্যার কাছেই হনুমানগড়ি ( Hanuman Garhi Temple) । সেখানেও চলছে তুমুল ব্যস্ততা। আর সেখানেই রয়েছে বঙ্গ-যোগ।  মানুষের বিশ্বাস, হনুমানকে ছাড়া রামচন্দ্রের কোনও কাজই শুরু হতে পারে না। তাই ভক্তরা হনুমানগড়ি মন্দিরে পুজো দিয়ে, তাঁর আশীর্বাদ নেন অযোধ্যায় আসলে। সরযূ নদীর তীরে অবস্থিত হনুমানগড়ি মন্দির। । এই মন্দিরে সর্বদাই অনুরণিত  হয় রাম-গান। গর্ভমন্দিরে রামসীতা তো রয়েছেনই , সঙ্গে সর্বাঙ্গে সিঁদুর মাখানো হনুমানজির বিশাল মূর্তি।


অযোধ্য়ার হনুমানগড়ির সঙ্গে বাংলার যোগ আছে। এখানকার যাঁরা মহন্ত, তাঁরাই গঙ্গাসাগরে কপিলমুণির আশ্রম যারা চালান। জানা গেল, এখানকার প্রধান এখন গঙ্গাসাগরেই আছেন। প্রধানমন্ত্রী বা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যিনিই অযোধ্যা আসেন, আগে পুজো দেন হনুমানগড়িতে। 


বাঙালি চিরকালীনই ভ্রমণ প্রিয়। আর বেনারসের সঙ্গে তার আলাদা টান। অনেকেই এখন বেনারসের সঙ্গে বেড়ানোর তালিকায় যোগ করে নিচ্ছে অযোধ্য়াকেও। ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের পর পর্যটকদের ঢল আরও বাড়বে বলেই আশা সকলের। রামমন্দিরের উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে অযোধ্যার রূপ বদলাচ্ছে। বদলাচ্ছে অর্থনীতিও। স্থানীয় বাজারে ঢুঁ মেরেই তা চোখে পড়তে বাধ্য। 


অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের আবেগের ঢেউ বাংলায় কতটা আছড়ে পড়বে তা নিয়ে নানা মানুষের নানা মত থাকলেও, বঙ্গে তার আবহ রচনার প্রচেষ্টা আগেই শুরু হয়েছে। সম্প্রতি রঘুকুলপতির প্রতীকী পাদুকা পুজোর আয়োজন করা হয় ২০০ বছরের বেশি পুরনো কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে। ভারতীয় জাদুঘরের কেন্দ্রীয় চত্বরে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় রামচরণ পাদুকা পূজন। অনুষ্ঠানে রামের প্রতীকী পাদুকা পুজোর পাশাপাশি তুলে ধরা হয়  রামায়ণের গুরুত্ব।                                  


আরও পড়ুন :


নতুন মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে রাম মন্দিরে, 'আমন্ত্রণ' হিসাবে অযোধ্যা থেকে কী এল জয়গাঁওয়ে ?