রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: গত কাল চা বাগানে এক অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীর দাপাদাপি দেখেছিল আলিপুরদুয়ার (alipurduar)। এবার রেললাইনের এক দলছুট হাতির (elephant) দাপাদাপি দেখল বানারহাটের (banarhat) মানুষ। ঘটনায় আতঙ্কের হিমস্রোত বাসিন্দাদের মধ্যে। 


কী দেখা গেল?
রবিবার সকাল। হঠাতই একটি হাতি মরাঘাট এলাকায় ঢুকে বানারহাট কার্তিক ওঁরাও হিন্দি গভর্নমেন্ট কলেজের পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ভিড় জমান এলাকার বহু মানুষ। পথচলতি নিত্যযাত্রী ও পর্যটকদের মধ্যে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। কিন্তু দিনের বড় সময় যে ভাবে হাতিটি দাপাদাপি করেছে, তাতে আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়ে বড় অংশের মধ্যে। তিন-তিনটি চা বাগান, রেললাইন, জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক পেরিয়ে বানারহাট কার্তিক ওঁরাও হিন্দি গর্ভনমেন্ট কলেজের পাশে আসা ও রেতির জঙ্গল থেকে মরাঘাট জঙ্গলে ফেরার গোটা পর্বে সে যা করেছে, তা অনেকেই ভুলতে পারছেন না। সব মিলিয়ে যথেষ্ট ভয়ের পরিবেশ ছিল ওই এলাকায়। 


হস্তিনী-মৃত্যু...
গত কাল মারা যাওয়ার আগে ভয়ঙ্কর দাপাদাপি করতে দেখা গিয়েছিল এক অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীকেও। আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের নিমতিঝোড়া চা বাগানের ওই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, গত কাল সকাল ৯টা নাগাদ বক্সা ব্য়াঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল থেকে আচমকাই একটি হস্তিনী ছুটে এসে ঢুকে পড়েছিল কালচিনি ব্লকের নিমতিঝোড়া চা বাগানে। তার পর হঠাৎ বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের দিকে ধেয়ে যায়। কিন্তু এতেই শেষ নয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আচমকা নানা দিকে খেয়ালখুশিমতো ছোটাছুটি শুরু করে। প্রায় ফাঁকা বাগানে তার এই অদ্ভুত আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক বলে মনে হয়েছিল হাজির হাতেগোনা শ্রমিকদের। ওই পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় নিয়ে তাঁরা যখন ভাবছেন, ঠিক তখনই বাগানের ২ নম্বর কম্পার্টমেন্টের মধ্যে পড়ে যায় ওই হস্তিনী। খবর পেয়েই চলে আসেন বনকর্মীরা। কিন্তু তার আগে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। মারা গিয়েছে হস্তিনী। পরে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশ্চিম উপক্ষেত্র অধিকর্তা পরভিন কাসওয়ান জানান, ওই এলাকা থেকে একটি অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাতির মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। দুজন ভেটেরিনারি অফিসারের উপস্থিতিতে তার ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, হাতিটির পেটে প্রচুর পরিমাণে পরজীবী ছিল। পরজীবীগুলো 'এলিফ্যান্ট বট ফ্লাই' (কোবোল্ডিয়া) গোত্রের। ময়নাতদন্তের সময় আরও বোঝা যায়, হস্তিনীর পেটে কোনও খাবার ছিল না। পরজীবীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য সেটি 'জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া'-য় পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান পরভিন। কিন্তু মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। 
এদিন অবশ্য কোনও মর্মান্তিক পরিণতির ঘটনা ঘটেনি। তবে রেললাইনের উপর যে ভাবে হাতিটি দাপাদাপি করছিল, তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা যে একেবারে ছিল না তা নয়। স্রেফ বরাতজোরে কোনও অঘটন ঘটেনি তার। ক্ষতি হয়নি স্থানীয়দেরও।


আরও পড়ুন:বোলপুরের শঙ্কর রাইস মিলের মালিক কে ? উত্তর এড়ালেন স্থানীয়রা ; তদন্তে সিবিআই