অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: হস্তিনীর (female elephant) অস্বাভাবিক (unnatural) মৃত্যু (death) ঘিরে আলোড়ন কালচিনির নিমতিঝোড়া চা বাগানে। বনকর্মীরা (forest workers) জানাচ্ছেন, মৃত্যুর সময় সেটি অন্তঃসত্ত্বা (pregnant) ছিল।
কী ঘটেছিল?
সকাল ৯টা। বক্সা ব্য়াঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল থেকে আচমকাই একটি হস্তিনী ছুটে এসে ঢুকে পড়েছিল কালচিনি ব্লকের নিমতিঝোড়া চা বাগানে। তার পর হঠাৎ বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের দিকে ধেয়ে যায়। কিন্তু এতেই শেষ নয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আচমকা নানা দিকে খেয়ালখুশিমতো ছোটাছুটি শুরু করে। প্রায় ফাঁকা বাগানে তার এই অদ্ভুত আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক বলে মনে হয়েছিল হাজির হাতেগোনা শ্রমিকদের। ওই পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় নিয়ে তাঁরা যখন ভাবছেন, ঠিক তখনই বাগানের ২ নম্বর কম্পার্টমেন্টের মধ্যে পড়ে যায় ওই হস্তিনী। খবর পেয়েই চলে আসেন বনকর্মীরা। কিন্তু তার আগে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। মারা গিয়েছে হস্তিনী। পরে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশ্চিম উপক্ষেত্র অধিকর্তা পরভিন কাসওয়ান জানান, ওই এলাকা থেকে একটি অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাতির মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। দুজন ভেটেরিনারি অফিসারের উপস্থিতিতে তার ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, হাতিটির পেটে প্রচুর পরিমাণে পরজীবী ছিল। পরজীবীগুলো 'এলিফ্যান্ট বট ফ্লাই' (কোবোল্ডিয়া) গোত্রের। ময়নাতদন্তের সময় আরও বোঝা যায়, হস্তিনীর পেটে কোনও খাবার ছিল না। পরজীবীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য সেটি 'জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া'-য় পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান পরভিন। কিন্তু মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
নতুন নয় মৃত্যু...
হাতির মৃত্যু উত্তরবঙ্গে নতুন কোনও ঘটনা নয়। দিনতিনেক আগে আলিপুরদুয়ারে ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের ভাটপাড়ার বিজয়পুরবস্তি এলাকায় এক হস্তিনীর মৃতদেহ মিলেছিল। বন দফতরের ধারণা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। লক্ষণীয় বিষয় হল, হস্তিনীর দেহের পাশেই একটি বিশাল বড় গর্ত খোঁড়া দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ ছিল তার সমাধির তোড়জোড় চলছে। তার তিন দিন ফের কালচিনি ব্লকের নিমতিঝোড়া চা বাগানেই মৃত্যু আর এক হস্তিনীর। তবে এক্ষেত্রে সন্দেহ বাড়াচ্ছে মৃত্যুর ধরন। অন্তঃসত্ত্বা হাতিটির মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ ছিল কি? জানতে তৎপর বন দফতর। তবে তার এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকের পরিবেশ চা বাগানে।
আরও পড়ুন:'সিবিআই দিয়ে মমতাকে ভয় দেখানো যাবে না', নয়া হোর্ডিং নিউ মার্কেট এলাকায়