কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহা টাকার বিনিময়ে একাধিক ব্যক্তিকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এরকম বেশ কয়েকজনকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠাল ED। যাঁদের তলব করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলে সূত্রের খবর। সকালে নথি নিয়ে সল্টলেকের ইডি অফিসে এসেছেন এমন চার জন। ED সূত্রে খবর, আর্থিক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন করা হবে তাঁদের। চাকরির প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে জীবনকৃষ্ণ কত টাকা চেয়েছিলেন, সেই প্রশ্ন করা হবে বলে খবর সূত্রের।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম মূল চক্রী। প্রভাবশালী। শাসকদলের বিধায়ক। মাত্র ৭ প্রার্থীর থেকেই চাকরি দেওয়ার নামে তুলেছিলেন প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা। ৭৫ জন প্রার্থীর থেকে টাকা নিয়েছিলেন। তাঁর ও স্ত্রীর নামের অ্যাকাউন্টে একটি ব্যাঙ্কেই জমা পড়েছিল ১ কোটি টাকার বেশি। বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতারের পর এমনই চাঞ্চল্যকর একাধিক তথ্য আদালতে জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই আবহে ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, জেলবন্দি জীবনকৃষ্ণ সাহার সঙ্গে যোগ রয়েছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের। সূত্রের দাবি, মুর্শিদাবাদের বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কে জীবনকৃষ্ণ সাহার দু'টি অ্যাকাউন্ড থেকে কলকাতার একটি কোম্পানিতে একাধিকবার টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। তদন্তের পর দেখা গেছে, যে কোম্পানির অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে, তার মালিক ধৃত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়।

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে, ২০২২ সালে মিডলম্য়ান প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। ২০২৪ সালে প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করে আরেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি প্রসন্ন রায়। এখন ইডি সূত্রে যে দাবি করা হচ্ছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মিডলম্যানের কোম্পানিতে কেন টাকা পাঠান তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ ? তাহলে কি সেই টাকা প্রসন্ন রায়ের মাধ্যমে কোথাও বিনিয়োগ করা হচ্ছিল ? কোনও সম্পত্তি কেনা হয়েছিল ? নাকি, প্রসন্ন রায়ের কোম্পানির অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা যাচ্ছিল কোনও প্রভাবশালীর কাছে ?

এর আগেই, ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নামে তোলা টাকা একাধিক ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। একাধিক সম্পত্তিও কিনেছিলেন বলে অভিযোগ । যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তৃণমূল বিধায়ক অস্বীকার করেছেন বলে সূত্রের খবর। তিনি বলেছিলেন, আমরা ব্যবসায়ী পরিবারের লোকজন। আমাদের বছরে টার্নওভার ২ কোটি টাকা। আমরা ব্যবসায়ী পরিবারের লোকজন। আমি প্রথম থেকেই ব্যবসা করতাম। ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। রেশন ডিস্ট্রিবিউটর, রাইস মিল আছে। আলুর কোল্ড স্টোর আছে।"