প্রকাশ সিনহা ও সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ বিকৃত করার অভিযোগ তুলল কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED।  দিল্লি পুলিশের (Delhi Police) ক্রাইম ব্রাঞ্চে (Crime Branch) দায়ের হল FIR।


কী নিয়ে অভিযোগ? 


বছর খানেক আগে কয়লাকাণ্ডে ব্যবসায়ী গণেশ বাগাড়িয়ার সঙ্গে কয়েকজনের কথোপকথনের একটি টেপ ভাইরাল হয়। অভিযোগ ওঠে, কণ্ঠস্বর ইডি-র কয়েকজন অফিসারের। এ নিয়ে কালীঘাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মামলায় ED-র চারজন অফিসারকে তলব করে পুলিশ।  


এই প্রেক্ষাপটে ED-র দাবি, কলকাতা পুলিশের তরফে মেল করে বলা হয়, আলিপুর আদালতের নির্দেশ, ED-র জয়েন্ট ডিরেক্টর কপিল রাজকে কলকাতায় আসতে হবে এবং কণ্ঠস্বরের নমুনা দিতে হবে। 


ইডির দাবি


কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, আদালতের সেই নির্দেশ যখন তাঁরা নিজেরা সংগ্রহ করে, তখন তাতে, এমন কোনও নির্দেশ ছিল না। বরং বলা ছিল, ED-র জয়েন্ট ডিরেক্টর কপিল রাজ সম্মতি দিলে তবেই তাঁর কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করা যাবে। এখানেই আদালতের নির্দেশকে বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছে ED। সম্প্রতি এ নিয়ে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চে লিখিত অভিযোগ করে ED। ২০ এপ্রিল এই ঘটনায় FIR দায়ের করে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। 


আরও পড়ুন, পাটশিল্প বাঁচাতে মমতার দ্বারস্থ বিজেপি সাংসদ 


কলকাতা পুলিশের পাল্টা দাবি


অন্যদিকে, এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে,  আলিপুর আদালতের  (GR) বিভাগ থেকেই নির্দেশনামা সংগ্রহ করা হয়েছিল। পরে নির্দেশনামা যাচাইয়ের সময় দেখা যায়, GR থেকে যে নির্দেশনামা সংগ্রহ করা হয়, তাতে একটা লাইন ছিল না। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে বিচারকের দৃষ্টিতে আনা হয়। বিচারক এর কারণ জানতে চান।  


এ নিয়ে শুনানির পর বিচারক জানিয়ে দেন, GRO তরফে অসত্‍ উদ্দেশ্যে বাদ দেওয়া হয়, এরকম ইঙ্গিত করার মতো কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বাদ যাওয়ার এই ঘটনায় নির্দেশের মূল কাঠামো ও উদ্দেশ্য অপরিপর্তিত রয়েছে। তদন্তকারী অফিসার বা GRO-এর পক্ষ থেকে কোনও খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। 


পরে আদালত থেকে নতুন নির্দেশনামা সংগ্রহ করে তা ED-কে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে কলকাতা পুলিশ। এদিকে তাঁদের অফিসারদের তলবের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে পাল্টা মামলা দায়ের করে ED। সেই মামলায় কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করাতে আপাতত ED-র অফিসারদের কলকাতা পুলিশের কাছে যেতে হবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।