বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সাংগঠনিক পদে রদবদল করছে তৃণমূল (TMC)। পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur) জেলায় দলের খড়্গপুর (Kharagpur) শহর-সভাপতির পদ থেকে দীপ্যেন্দু পালকে সরিয়ে সূর্যপ্রকাশ রাওকে ওই পদে বসানো হয় সেই রদবদলের অঙ্গ হিসেবে। আর তার পরই দলের (party) বিরুদ্ধে ক্ষোভ (grievance) উগরে দিলেন দীপ্যেন্দু পাল। বললেন, 'আমার নামে কোনও তছরুপের মামলা নেই। কারও কাছে ঘুষ খেয়েছি বা টাকা নিয়েছি বা কোনও মহিলাঘটিত ব্যাপার, এমন কোনও অপবাদও নেই। তাও আমাকে হঠাৎ সরিয়ে দিল। বিরোধী বা অন্য দল থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁরাই দেখছি এখন তৃণমূলে প্রাধান্য পাচ্ছেন। '


'ক্ষোভ' তৃণমূল নেতার
খড়্গপুরে তৃণমূলের প্রাক্তন শহর-সভাপতির অভিযোগ,'যাঁরা সক্রিয়ভাবে তৃণমূল করছেন, দিদি ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে ভালোবাসেন, দলের মধ্যে তাঁদের কোনও প্রাধান্য নেই। যাঁদের এখন সভাপতি বা সহ-সভাপতি করেছে, তাঁদের ১০ বছর ধরে দলে কোনও অস্তিত্ব নেই। দলের কোনও অনুষ্ঠানে তাঁদের দেখা যায়নি। কোন কাজে তাঁদের পাওয়া যায়নি। তাঁরা আজ দলের সভাপতি হয়ে গিয়েছেন। যেটা হয়েছে খুব ভুল হয়েছে। অন্যায় হয়েছে। এর ফল দল পাবে। খড়গপুরকে নিঃশেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। বেশ কিছু মানুষ আছেন যাঁরা প্রত্যেক নির্বাচনে বিজেপির কাছে টাকা নিয়ে তৃণমূলকে শেষ করার জন্য উঠে পড়ে লাগেন। তাঁরাই আজ দলে প্রাধান্য পেয়ে যাচ্ছেন। দল আমার সঙ্গে ন্যায় করেনি। যাঁরা দিদির ফ্লেক্সকে খুলে ফেলে দেন, তাঁরাই দলে প্রাধান্য পাচ্ছেন। দল একবার বলছে প্রোমোটারদের দলে আনা হবে না। অথচ প্রোমোটারদের পোর্টফোলিও দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দল বলছে এক জন একটাই পদ পাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে একজনকেই দল একের পর এক পদ দিচ্ছে। কখনো সিআইসি দিচ্ছে, কখনো মহিলা সভাপতি দিচ্ছে।'
    মেদিনীপুর তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, 'দল বিভিন্ন সময় তার কর্মীদের নিত্য দিন কাজের জায়গা তৈরি করে দেয়। খড়্গপুরে যিনি সভাপতি ছিলেন, পুরসভা নির্বাচন তিনি কাজ করেছিলেন। আমরা সকলে মিলে এক সঙ্গে তাঁকে সহযোগিতা করেছিলাম। দল মনে করেছে, সামনে লোকসভা নির্বাচন নতুন কাউকে সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন আছে। দল সিদ্ধান্ত যেটা নিয়েছে সেটা আমাদের কাছে শেষ কথা। সর্বোচ্চ আমাদের রাজ্য কমিটি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্যান্য ব্লকে যেমন হয়েছে তেমনই খড়্গপুরে সভাপতি ঘোষিত হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত মতামতের কোনও ভূমিকা নেই।' তবে তৃণমূলের এই অন্দরের কোন্দল নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি অরূপ দাস বলেন,  'খড়গপুর শহরে ওঁদের সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরিয়ে দেওয়ার ফলে তিনি তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সরিয়ে দিয়ে কি সমস্যার সমাধান সম্ভব? সমাধান কি করা যাবে? দলটায় তো সকলে চোর। কাকে সরাবেন আর সরিয়ে কাকে নিয়ে আসবেন। সেই চোরকে সরিয়ে তো চোরকেই আনতে হবে। তৃণমূলে এই যে সাংগঠনিক রদবদল, এগুলো মানুষের কাছে নিজেদের ভাল ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা। কিন্তু আসলে তা নয়, মানুষ বুঝতে পারছে। এতে লাভ কিছু হবে না। খড়গপুর শহরে যিনি ছিলেন উনি জানিয়েছেন ভাল কাজ করা সত্বেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলে যে ভাল কাজ করবে তাঁর জায়গা নেই। তৃণমূলে যে চুরি করবে, যে কাটমানি নেবে, যে দলবাজি করবে, যে গোষ্ঠীকোন্দল করবে তিনি তৃণমূলের ভাল নেতা। ভাল জায়গা পাবেন। আজ খড়গপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় সভাপতি বদল হয়েছে। যা হওয়ার তাই হয়েছে।'


আরও পড়ুন:আইকিউওও, ওয়ানপ্লাস, শাওমি... আরও অনেক ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন অ্যামাজনের দুর্দান্ত ছাড়