রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: সোশ্য়াল মিডিয়া প্ল্যার্টফর্ম ফেসবুকে দুই তৃণমূল নেতার লড়াইকে কেন্দ্র (TMC Inner class) করে সরগরম হয়ে উঠেছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) রাজনীতি। জমজমাট জলসা উদ্বোধন করছেন তৃণমূল নেতা, ওই মঞ্চের পাশের রমরমিয়ে চলছে জুয়ার আসর। আর জুয়ার বোর্ডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গোছা গোছা টাকা। চাঞ্চল্যকর সেই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে কটাক্ষ করলেন অপর এক তৃণমূল নেতা। যাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম লেগে গেছে জলপাইগুড়ির রাজনীতিতে। আর মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মাঝেই জলপাইগুড়িতে ফের একবার প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। ঘটনাটি ঘটেছে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি তপন দে এবং তৃণমূলের এসটিএসসিওবিসি সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাসের মধ্যে। বিতর্কিত ওই ফেসবুক পোস্টকে সামনে রেখে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল জলপাইগুড়িতে।
তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি তপন দে-র বিরুদ্ধে জুয়োর আসর বসানো সহ একাধিক অভিযোগ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন কৃষ্ণ দাস। ওই ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, কালীপুজো উপলক্ষে গত সোমবার রাতে জলপাইগুড়ি করলা ভ্যালি চা বাগানে একটি জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। আর সেই অনুষ্ঠানটি প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন করেছেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি তপন দে। সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চললেও মঞ্চের পিছন দিকে চলছিল দেদার জুয়ার আসর। সেই ছবি ও ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তৃণমূলের এসটিএসসি এবং ওবিসি সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস।
এপ্রসঙ্গে কৃষ্ণ দাস জানান, "আমার কাছে খবর আসে মেলাতে জুয়ার আসর বসেছে। যারা আয়োজক, তারাই নেতৃত্ব দেয়। আরেক নেতাকে দেখলাম উদ্বোধন করছেন। এইভাবে যদি সমাজকে নষ্ট করা হয়। শ্রমিকদের ভাগ্য কীভাবে বদলানো যায়। পকেট কীভাবে খাল করা যায় তার জন্যই আসর বসাই। এর প্রতিবাদ আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে জানাই। এরা আমাদের দলের লোক নয়। এরা দলের লোক হলে আজ জলপাইগুড়ির এই হাল হত না। এরাই কালপ্রিট যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্পে জল ঢেলে দিচ্ছে। এরাই সব শেষ করে দিচ্ছে অনৈতিক কাজ করে। কেউ বলেনি মেলার মধ্যে জুয়া লাগাও, মদের আসর বসাও, নিজের পকেট ভর্তি করতে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব, করছি, আগামীতেও জারি থাকবে।"
অন্যদিকে INTTUC-র জেলা সভাপতি তপন দে জানান, "কেউ যদি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করতে যায় বা ফিতে কাটতে যায় সেটা দেখা তার কাজ নয়। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি মেলায় কোনও অবৈধ কাজ হয়নি। যারা এসব করছে সোশ্যাল মিডিয়াতে তারা রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। আমরা মাদারিহাটের উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সেখানে কোন নেতা কী বলল আসে যায় না। নির্বাচনের প্রচারে ওনার নাম নেই তাই হাইলাইটে আসার জন্য এটা করছেন। আমি কোনও অবৈধ কাজ করি না এবং যুক্তও না। যে নেতা এটা করছেন, আদিবাসীদের অপমান করছেন আমি ধিক্কার জানাই।"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।