ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: কড়েয়ায় (Karaya) গ্রেফতার 'ভুয়ো' আইএএস (Fake IAS Officer Arrest)। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে কর্মরত আমলার পরিচয় দিয়ে প্রতারণার (Fraud) অভিযোগ। রয়েছে ভিআইপি কোটায় জমি পাইয়ে দেওয়ার নামে ১২ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগও। পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, পানশালার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নামেও প্রতারণার অভিযোগ ধৃতের বিরুদ্ধে। কড়েয়ায় হোটেল থেকে বড়তলা থানার হাতে গ্রেফতার অভিযুক্ত। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে গাড়ি যাতে নবান্ন, মহাকরণ, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের স্টিকার সাঁটা বলে পুলিশ সূত্রে খবর। 


কী জানা গেল?
এপিসি রোড এলাকার বাসিন্দা, এক মহিলা, কয়েকদিন আগে জানিয়েছিলেন যে সন্তুকুমার মিত্র নামে এক ব্যক্তি নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে কর্মরত আমলা বলে পরিচয় দেন। এতেই শেষ নয়। এই পরিচয় দিয়েই ওই মহিলাকে রাজারহাটে এক বিশাল ফ্ল্যাট অতি কম দামে পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি, অভিযোগ এমনই। পাশাপাশি, পানশালা ও রেস্তোরাঁ-ও সস্তায় করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি, আরও জানিয়েছেন ওই মহিলা। সেই মর্মে অভিযোগকারিণীর থেকে প্রায় ১১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা নিয়েছিলেন সন্তুকুমার মিত্র। কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদ পেরোনোর পরও অভিযোগকারিণীর বক্তব্য, তিনি কিছুই পাননি। অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। এর পরেই বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার পরই কড়েয়া থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় সন্তুকুমার মিত্রকে। পুলিশের দাবি, তিনি মোটে আইএএস অফিসার নন। আগামীকাল ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তাঁকে পেশ করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানানো হবে। আর কার সঙ্গে এই ধরনের প্রতারণা তিনি করেছেন, সেটিও জানার চেষ্টা করা হবে বলে খবর।


হালেই আর এক ঘটনা...
সপ্তাহখানেক আগে প্রতারণার অভিযোগেই গ্রেফতার হয়েছেন কলকাতা পুলিশের সোমনাথ ভট্টাচার্য। তিনি অবশ্য ভুয়ো নন, একেবারে খাঁটি পুলিশকর্তা। প্রাথমিক ভাবে শোনা গিয়েছে, ২ জনের থেকে ৬৬ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন তিনি। এই নিয়ে ব্যারাকপুর কমিশনারেটে ডেকে ম্যারাথন জেরা করা হয় তাঁকে। তার পরই গ্রেফতার হন কলকাতা পুলিশের ওই এসিপি। কলকাতার গোয়া বাগানের বাসিন্দা শৌর্য সাহা ও হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় বসুর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়েছেন সোমনাথ। শৌর্যর অভিযোগ, তাঁকে পানশালার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া ও তাঁর বোনের কলকাতা পুরসভার গ্রুপ সি পদে চাকরির নামে দু'দফায় প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন পুলিশকর্তা। পাশাপাশি, সঞ্জয় বসুর স্ত্রীকে আবাসন দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়া ও তাঁকে পানশালার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ৩০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে খবর। শুধু তাই নয়। ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রে খবর, এমন একাধিক ব্যক্তির থেকেই চাকরি ও পানশালার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন সোমনাথ। গত শুক্রবার তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার হয়েছেন পুলিশকর্তা। গত শনিবার তাঁকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশকর্তাকে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আরও যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন বলে খবর, তাঁদের খোঁজ চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। 


আরও পড়ুন:ঝোড়ো অর্ধশতরান হাঁকালেন, কেকেআরের বিরুদ্ধে নজিরও গড়লেন ঈশান কিষাণ