প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: ১০ বছরে ৯০০ বার ব্যাঙ্কক সফর! প্রায় পাশের পাড়ার মতো। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই অন্তত ২ বার করে ব্যাঙ্কক যেতেন নাকি তিনি। তিনি জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে নজরে থাকা খড়দার ব্যবসায়ী বিনোদ গুপ্ত। আপাতত তিনি ED-র স্ক্যানারে। সূত্রের খবর, বিনোদ গুপ্তর জীবনযাত্রা, ব্যাঙ্ককে এপাড়া-ওপাড়ার মতো যাতায়াত দেখে কপালে চোখ ইডি-রও ।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ফরেন কারেন্সি এক্সচেঞ্জের কারবার
পাসপোর্ট জালিয়াতির নেটওয়ার্ক কোথায় কোথায় ছড়িয়ে, তার তদন্তে নেমে গতকাল, মঙ্গলবার বিকেলে ব্যবসায়ী বিনোদ গুপ্তর খড়দার বাড়িতে হানা দেন ED-র আধিকারিকরা। তল্লাশিতে ইডির হাতে নাকি উঠে এসেছে এমন সব তথ্য, যা কার্যত তাক লাগানো। তল্লাশি পর্বের পর চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে ED।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর, ফরেন কারেন্সি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত ওই ব্যবসায়ী গত ১০ বছরে ৯০০ বার ব্যাঙ্কক গিয়েছেন! সপ্তাহে ২ বার করে থাইল্যান্ডের রাজধানী শহরে তাঁর সফর ছিল বাঁধা। ED সূত্রে দাবি, বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ফরেন কারেন্সি এক্সচেঞ্জের কারবার করতেন ব্যবসায়ী বিনোদ গুপ্ত। ED সূত্রে আরও দাবি, ব্যবসায়ী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গ্রসারি সামগ্রী বিক্রির জন্যই ঘন ঘন ব্যাঙ্কক যেতেন তিনি। সত্যিই কি তাই? কেন এতবার ব্যাঙ্কক যাতায়াত? অবৈধভাবে ফরেন কারেন্সি এক্সচেঞ্জের জন্য? ব্যাঙ্কক থেকে সোনাও আনা হয়েছে অবৈধভাবে? ED সূত্রে খবর, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পাসপোর্টকাণ্ডে আগেও একাধিক গ্রেফতার
এর আগে জাল নথির তদন্তে নেমে, গত ১৩ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় চাকদার বাসিন্দা ইন্দুভূষণ হালদারকে। পাসপোর্টকাণ্ডে আগেই ধৃত পাক নাগরিক আজাদ মল্লিককে জেরা করে ইন্দুভূষণের খোঁজ পায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ED সূত্রে খবর, এই ইন্দুভূষণের মাধ্যমেই বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দিত আজাদ মল্লিক। প্রতিটা পাসপোর্ট তৈরির জন্য ৫০ হাজার টাকা করে নিতেন ইন্দুভূষণ হালদার। পাক নাগরিক আজাদ মল্লিকের সঙ্গে ইন্দুভুষণ হালদারের যোগ রয়েছে বলে আগেই দাবি করা হয়েছিল ED সূত্রে। সেই ঘটনারই তদন্তে নেমে চাকদার কাঠমিস্ত্রি বিপ্লব সরকারের হদিশ পায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ED সূত্রে খবর, আটক বিপ্লব সরকার আর তাঁর বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধেও ভুয়ো নথি দেখিয়ে পাসপোর্ট তৈরির অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রে কি আরও কেউ জড়িত? সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।