কলকাতা: মেদিনীপুরে মেডিক্যালে বিষ স্যালাইনকাণ্ড, রাজভবনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । স্যালাইনকাণ্ডে অসুস্থ প্রসূতির পরিবারকে নিয়ে রাজভবনে শুভেন্দু ।


কীভাবে দিনের পর দিন রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বিতর্কিত স্যালাইন? কর্ণাটকে নিষিদ্ধ, তাও কীভাবে বাংলার সরকারি হাসপাতালে RL স্যালাইন? কলেজ স্কোয়ার থেকে বিজেপিপন্থী চিকিৎসক সংগঠনের মিছিল। রাজ্যপালের অবস্থান প্রকাশ্যে আনার দাবি বিরোধী দলনেতার । 'কয়েক লক্ষ মানুষ বিষ স্যালাইনে আক্রান্ত, তথ্য সামনে আসুক। অস্ত্রোপচার ত্রুটি, এমন অভিযোগ কোথাও নেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে', তাও কেন ১৩জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড? প্রশ্ন বিজেপির চিকিৎসক সেলের।


স্যালাইনকাণ্ডে এই ভয়ঙ্কর অবস্থার জন্য় দোষ কাদের? সূত্রের খবর, মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের ঘটনায়,'রিঙ্গার ল্যাকটেট' স্য়ালাইনের শুদ্ধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে তদন্ত কমিটি।  সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য় ভবনে পেশ করা তদন্ত কমিটির ৫ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে,'রিঙ্গার ল্যাকটেট' বিশুদ্ধ না হওয়াই বিপত্তির কারণ বলে তাদের সন্দেহ। রিপোর্টে বলা হয়েছে,প্রসূতিদের অসুস্থতার কারণ হিসেবে, 'RL ইনফিউশন' এবং 'অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশনে'র ভূমিকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।


তদন্ত কমিটির কাছে মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,  ৮ তারিখ, রাত ১০টা ৫০ থেকে ভোর ৬টা ৫০, ৮ ঘণ্টায় ৭টা ডেলিভারি হয়। সূত্রের খবর, এই ৭ প্রসূতির মধ্য়ে ২ জনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, 'রিঙ্গার ল্য়াকটেট' প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে জটিলতা শুরু হয়েছে। তারপর আরও ৩ জনকে দেওয়া হয় এই একই স্য়ালাইন। তাঁদের ক্ষেত্রেও যখন একই জটিলতা তৈরি হয়, তখন ঝুঁকি না নিয়ে বাকি ২ প্রসূতির পরিবারকে বাইরে থেকে স্য়ালাইন কিনে আনার কথা বলা হয়। 
 


সূত্রের খবর,কমিটির তদন্তে এও উঠে এসেছে যে, মেডিসিন বিভাগের রোগীদের ক্ষেত্রেও RL স্যালাইন প্রয়োগের পরই জ্বর এবং কাঁপুনি সমস্যা দেখা গেছে। সূত্রের খবর, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, প্রসূতিদের সমস্যা বাড়িয়েছে 'অক্সিটোসিনে'র অতিরিক্ত ব্যবহার। ৫ জন রোগীর ক্ষেত্রেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত মাত্রায় 'অক্সিটোসিন' দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকের একাংশ এর উল্টো যুক্তিও দিচ্ছেন! চিকিৎসক তমোনাশ চৌধুরী বলেন, অতিরিক্ত ব্লিডিং হলে অক্সিটোসিন দিতে হয়। সেটা কী পরিমাণ দিতে হবে তা অবস্থা বুঝে দিতে হয়। ডাক্তাররা সেটা ঠিক করেন।


আরও পড়ুন, আড়াই বছরের শিশু কোলে এপারে, বাংলাদেশে পড়ে রইল বাড়ি ! কাঁটাতার পেরোতেই যা হল...


অক্সিটোসিনের মান কেমন ছিল দেখতে হবে, তদন্তের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।  চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, কর্ণাটকের যে সংস্থা দেশের বিভিন্ন রাজ্য়ে একচেটিয়াভাবে অক্সিটোসিন সরবরাহ করে, তাদের মান নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন উঠেছে। কেন্দ্র অক্সিটোসিন উৎপাদনের জন্য় ওই সংস্থাকেই চিহ্নিত করলেও তাদের মান নিয়ে পরবর্তী সময়ে প্রশ্ন ওঠায়, ২০১৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট রায় দেয়, অন্য় সংস্থাও অক্সিটোসিন তৈরি করতে পারবে। তারপর থেকেই একাধিক রাজ্য় অন্য় সংস্থা থেকে অক্সিটোসিন কিনতে শুরু করে। সেই সব রাজ্য়ে প্রসূতি মৃত্য়ুর হার যথেষ্ট কম। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সেই পথ অনুসরণ করেনি, কেন?