সৌমেন চক্রবর্তী, বিটন চক্রবর্তী ও অমিতাভ রথ, নেতাই: সকালে তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতে, শহিদ স্মরণে হাজির থাকলেও, সন্ধ্য়ায়, শুভেন্দু অধিকারীর (suvendu adhikari in netai) কর্মসূচিতে উপস্থিত হলেন না, নেতাইকাণ্ডে শহিদ ৩ জনের পরিবারের কেউ। আর এনিয়েই উঠেছে রাজনৈতিক বিভাজনের অভিযোগ। এদিকে, লালগড়ে অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও শুভেন্দুর মোমবাতি মিছিলের অভিযোগ তুলে, হাইকোর্টে রিপোর্ট দিতে চলেছে ঝাড়গ্রাম পুলিশ। 


বিতর্ক...
শহিদ দিবস পালন ঘিরে যখন তৃণমূল ও বিজেপির বাগ্‍‍যুদ্ধে সরগরম হয়ে উঠল নন্দীগ্রাম, তখন, নেতাইয়ে উঠল শহিদ পরিবারের মধ্য়ে রাজনৈতিক বিভাজনের অভিযোগ! রবিবার সকালে, তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতে যেখানে হাজির হলেন, শহিদ পরিবারের সমস্ত প্রতিনিধিরা, সেখানে, সন্ধেয়, শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচিতে অনুপস্থিত রইল ৩ শহিদের পরিবার। নেতাইকাণ্ডে নিহত অরূপ পাত্রের দাদা কার্তিক পাত্রের দাবি, 'আমাকে ডেকেছিল। যাইনি। এমনিই যাইনি।' ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ের বুকে ঘটে যায় ভয়ঙ্কর ঘটনা। সিপিএম কর্মী রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে ছোড়া গুলিতে মারা যান ৯ জন গ্রামবাসী। আহত হন অন্তত ২৮ জন৷ প্রতি বছর এই দিনটিতে, নেতাই গ্রামে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশে স্মরণ সভার আয়োজন করে শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটি। সেখানে উপস্থিত থাকেন তৃণমূলের নেতারা। এদিকে, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার পর, প্রতিবছর আলাদাভাবে, নেতাই গ্রামে গিয়ে, নিহতদের শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু গত বছর ৭ জানুয়ারি নেতাই যাওয়ার পথে পুলিশ বাধার দেয় বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা। এবার তাই আগেভাগেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি শিবির। সেই মতো, শুভেন্দুকে, রবিবার, ৫টা থেকে ৬টা, ১ ঘণ্টা নেতাইয়ে থাকার অনুমতি দেয় হাইকোর্ট। এদিন, বিকেল ৫টাতেই লালগড়ের নেতাই গ্রামে পৌঁছে যান শুভেন্দু। শহিদ বেদি গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে দেন। শহিদ পরিবারের হাতে তুলে দেন অর্থ সাহায্য়।
পরে বলেন, 'আমি কোনও পলিটিক্য়াল কথা বলিনি। এখানে এসেছি। শ্রদ্ধা জানিয়েছি। নিজের রুমাল দিয়ে মুছে দিয়েছি। ওরা খাইয়েছে রুটি, আলুর তরকারি, বেগুন ভাজা খেয়েছি। আমি তো ওদের কুটুম্ব।' তবে শুভেন্দু অধিকারীর এই কর্মসূচিতে অন্য় শহিদ পরিবারের সদস্য়রা গেলেও, যাননি, সেদিনের ঘটনায় নিহত, শ্য়ামানন্দ ঘড়াই, সৌরভ ঘড়াই ও অরূপ পাত্রের পরিবারের কোনও সদস্য়। কিন্তু সকালে, তৃণমূলের কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, জয়প্রকাশ মজুমদারের উপস্থিতিতে যে সভা হয়েছে, তাতে তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। নেতাইকাণ্ডে নিহত সৌরভ ঘড়াইয়ের স্ত্রী শম্পা ঘড়াই অবশ্য বললেন, 'আমাকে ২ পক্ষই ডেকেছিল। সকালে গিয়েছিলাম। বিকেলে সময় হয়নি।' শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত সংকীর্তন রায় বলেন, 'সকলকে ডাকা হয়েছিল। ৩ জন আসেনি। বাকিা এসেছে।সকলকে ডাকা হয়েছে। কেউ কেন আসেনি, জানি না।' এদিকে, এদিন নেতাইয়ের শহিদদের উদ্দেশ্য়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর, লালগড়ে মোমবাতি মিছিল করেন শুভেন্দু অধিকারী। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, লালগড়ে শুভেন্দুর মিছিলের অনুমতি ছিল না। গোটা ঘটনার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। হাইকোর্টে জমা দেওয়া হবে।


 


আরও পড়ুন:মেঘনার সঙ্গে নাচে-গানে বর্ষবরণ আবিরের, মেনে নেবে টুম্পা?