অর্ণব মুখোপাধ্য়ায় ও সৌরভ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, কলকাতা: চাকরি দেওয়ার নামে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের থেকে তুলেছিলেন প্রায় ২ কোটি টাকা। সেই টাকা তুলে দিয়েছিলেন অয়ন শীলের (ayan seal) হাতে। কিন্তু টাকা দিয়েও চাকরি হয়নি অনেকের। অভিযোগ, তাঁদের লাঞ্চনা (humiliation) সহ্য় করতে না পেরে, বিষ (poison) খেয়ে আত্মঘাতী (suicide) হন ব্য়ান্ডেলের দেবানন্দপুরের বাসিন্দা বাবা ও ছেলে। তবে কী মৃত্য়ুর জন্য় দায়ী অয়ন? অন্তত এমনই দাবি করছে মৃতদের পরিবার। 


কী জানা গেল?
বাবা, মা, ছেলে পুত্রবধূ। ৪ জনের সংসার। পুত্রবধূ তখন অন্তঃসত্ত্বা। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে এক সুখী পরিবার। কিন্তু এই পরিবারের উপরই ২০১৮-র অক্টোবরে নেমে আসে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। ব্য়ান্ডেলের কাছে, দেবানন্দপুরের বাসিন্দা এই পরিবারের কর্তা শ্রীকুমার চট্টোপাধ্য়ায় ও ছেলে রূপকুমার চট্টোপাধ্য়ায় বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ। আর এই দুই অস্বাভাবিক মৃত্য়ুর নেপথ্য়ে উঠে আসছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীলের নাম। সূত্রের খবর, শ্রীকুমার চট্টোপাধ্য়ায় নিজে সরকারি কর্মচারী ছিলেন। এলাকায় তৃণমূল নেতা বলেও পরিচয় ছিল তাঁর। এই পরিবারের অত্য়ন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন অয়ন শীল। সূত্রের দাবি, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলতেন শ্রীকুমার। সেই টাকা পৌঁছে দিতেন অয়নের কাছে। সূত্রের খবর, এভাবে প্রায় ২ কোটি টাকা তুলে অয়ন শীলকে দিয়েছিলেন শ্রীকুমার। শুধু তাই নয়, ক্য়ান্ডিডেটদের অরিজিনাল ডকুমেন্টও দিয়েছিলেন। কিন্তু, অভিযোগ, কেউ চাকরি তো পাননি। উপরন্তু নথিপত্রও সব গায়েব হয়ে গেছিল। এক চাকরিপ্রার্থীর বাবা, দুলাল দাসের অভিযোগ, 'চাকরির জন্য নয় লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে জমানো টাকা, এলআইসি-র টাকা ভেঙে সেই টাকা দিয়েছিলাম।' সুরজিৎ চক্রবর্তী নামে আর জন আবার মৃতের আত্মীয়। তাঁর দাবি, 'আমি তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড, স্নাতকের মার্কশিটের অরিজিনাল কপিও দিয়েছিলাম। পরে সেই নথি আর ফেরত পাননি।' স্থানীয় সূত্রে দাবি, টাকা দিয়েও চাকরি না পাওয়ায় চট্টোপাধ্য়ায় বাড়িতে এসে অপমান করে যেতেন চাকরিপ্রার্থীরা। মৃতের পুত্রবধূর দাবি, এই অপমান সহ্য় করতে না পেরেই ছেলেকে বিষ খাইয়ে নিজেকে শেষ করে দেন শ্রীকুমার। 


পরিবার কী বলছে?
রূপকুমারের স্ত্রী মধুমিতার বক্তব্য, 'পুলিশ বলে, ছেলেকে বিষ খাইয়ে নিজে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন বাবা শ্রীকুমার চট্টোপাধ্য়ায়। আমি তখন প্রেগন্য়ান্ট। বেশি কিছু জানতাম না। পরবর্তীকালে জেনেছি। সুইসাইড নোটে অয়নের নাম ছিল।' এই ঘটনার পর, ব্য়ান্ডেল পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন মৃত শ্রীকুমারের পুত্রবধূ।
কিন্তু, তার ভিত্তিতে কেউ আজ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।


আরও পড়ুন:সকালে আকাশ পরিষ্কার, কিন্তু বিকেলেই কি নামবে আবার তুমুল বৃষ্টি?