কলকাতা: কুন্তল ঘোষের নামে চার্জশিট জমা দিল ইডি। ১০৪ পাতার চার্জশিট জমা দিল ইডি (ED)। চার্জশিটে ২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ। ইডি-র চার্জশিটে অয়ন-শান্তনুর যোগসাজশের অভিযোগ। চার্জশিটে ১৮ জন সাক্ষীর উল্লেখ করেছে ইডি। 


চার্জশিট জমা দিল ইডি: গত ২১ জানুয়ারি ED-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জেলবন্দি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের মুখেই প্রথম উঠে এসেছিল কুন্তল ঘোষের নাম। কুন্তলের বিরুদ্ধে তাপস মণ্ডলের অভিযোগ, টেট পাস থেকে শুরু করে চাকরি দেওয়ার নামে ১৯ কোটির বেশি টাকা নিয়েছেন কুন্তল ঘোষ! শুধুমাত্র ৩২৫ জন টেট প্রার্থীর থেকেই নয়, চাকরির নামে টাকা তোলা হয়েছিল আপার প্রাইমারি এবং অর্গ্য়ানাইজার টিচারদের থেকেও! রিসিট দিয়ে টাকা নিয়েছিলেন হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল! তাপস মণ্ডলের আরও অভিযোগ করেন, টেট প্রার্থীদের পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিলেন যুব তৃণমূল নেতা। যুব তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হওয়ার দুমাস পর চার্জশিট জমা দিল ইডি।


এদিকে ED-র হাতে গ্রেফতার বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল। সূত্রের দাবি, শুক্রবার রাতে CGO-কমপ্লেক্স থেকে ফোন যায় অয়নের কাছে। শনিবার, তাঁকে চুঁচুড়ার ফ্ল্যাটে আসতে বলা হয়। শনিবার, দুপুর আড়াইটে নাগাদ, চুঁচুড়ার ফ্ল্যাটে আসেন অয়ন। শুরু হয় জিজ্ঞেসাবাদ। সূত্রের দাবি, প্রথমে নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন অয়ন। চুঁচুড়ার ফ্ল্যাটে যখন অয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তখন শনিবার, দুপুর ৩টে নাগাদ হঠাৎই অয়নের FD ব্লকের অফিসে পৌঁছে যান ED-র তদন্তকারী অফিসার। এর মধ্যেই চুঁচুড়ার ফ্লাট থেকে বেশ কিছু জমি বা সম্পত্তির নথি পান তদন্তকারীরা। অয়ন দাবি করেন, যেহেতু তিনি রিয়েল এস্টেটের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, এগুলো তারই নথি। এতে, সন্দেহ বাড়ে ED-র অফিসারদের।


এরইমধ্য়ে FD ব্লকের অফিসে, দেখা যায় ৭টি কম্পিউটার আছে যেগুলো খোলা যাচ্ছে না। পাসওয়ার্ড জানতে চাইলে অয়ন বলেন, মনে নেই। তখনই সিদ্ধান্ত হয়, অয়নকে FD ব্লকের অফিসে আনা হবে। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ অয়নকে সল্টলেকে নিয়ে আসা হয়। সূত্রের দাবি, এই অফিসের একটি ড্রয়ার থেকে উদ্ধার হয় OMR শিট। এই বিষয়ে অয়নের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন এগুলো তার নয়। এই বিষয় তিনি কিছুই জানেন না। একাধিক কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি অয়ন শীল। এরপরই, সল্টলেকের FD ব্লকে অয়ন শীলের অফিস থেকে বেশ কিছু পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি পাওয়া যায়। সেগুলোও তাঁর নয় বলে দাবি করেন অয়ন। টাকা যা পেয়েছেন, তা সিনেমায় এবং প্রোমোটিংয়ে খাটিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।এরপরই, অয়নকে দিয়ে কম্পিউটারগুলো খোলান হয়। এরপরই, বিস্ফোরক তথ্য হাতে আসে ED-র অফিসারদের। যার থেকে তদন্তকারীরা কার্যত নিশ্চিত হন যে, নিয়োগ দুর্নীতির টাকাই প্রোমোটিং এবং সিনেমায় বিনিয়োগ হয়েছে। এরপরই দিল্লির আধিকারিকদের সবুজ সঙ্কেতে গ্রেফতার করা হয় অয়ন শীলকে।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের অভিযোগ, ধর্নায় বসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ওড়িশা যাওয়ার পথে ঘোষণা