সন্দীপ সরকার, সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও অরিত্রিক ভট্টাচার্য,কলকাতা: মেট্রো (Metro Rail) বিপর্যয়ের জেরে কেউ বাড়িছাড়া, কারও মনে ভয়, এই বুঝি ভেঙে পড়ল বাসস্থান। বাড়ি ভাঙার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পাশের পাড়াগুলিতেও। আতঙ্কের প্রহর গুণছেন বউবাজারের বাসিন্দারা।
বউবাজারে ফাটল আতঙ্ক: অসহায় একাকী বৃদ্ধা। শরীরে মারণ রোগের অসহ্য যন্ত্রণা। তার থেকেও বেশি যন্ত্রণা মানসিক। এই বুঝি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বাড়ি। বউবাজারের বাসিন্দা যমুনাবালা সিংহ বলেন, “রাতে ঘুমোতে পারি না। মেট্রোর কাজ হলেই খাট নড়তে থাকে। গায়ে জল পড়ে। ক্যান্সার পেশেন্ট বাবা। একা থাকি। আমি কি কিছু করতে পারি? মেট্রোর কাজ জোরকদমে চলছে। তাতে আবার ফাটল শুরু হয়েছে।’’ দুচোখে প্রায় দেখতেই পান না ৮৫ বছর বয়সী অরুণা কর্মকার। উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটুকু নেই। মেট্রো বিপর্যয়ের জেরে, তাঁকেই এই বয়সে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। বারবার এভাবে ঘর ছাড়া হয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
বউবাজারে একের পর এক বাড়িতে এখন এই অসহায় মুখের ছবি। সবসময়ই ভয়। এই বুঝি আশ্রয়হীন হতে হয়। বাসিন্দাদের দাবি, ২০১৯-এ বিপর্যয়ের পর, মেট্রো রেলের তরফে মেরামতি করা হয়। কিন্তু আবার কাজ শুরু হতে না হতেই ফের ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা মৌমিতা ঘোষ বলেন, “ওরা সারিয়ে গেছে। তারপরেও চিড় ধরেছে। মেট্রোর আধিকারিকরা ফোন তোলে না। নেগলেক্ট করে। নিজেরাই তাই সারিয়ে নিই। ওরা তাপ্পি দিয়ে যায়। তাতে রিপেয়ার হয় না।’’
শুধুমাত্র বউবাজারের দূর্গা পিটুরি লেন কিংবা স্যাকরপাড়া লেনই নয়, বাড়ি ভাঙার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পাশের পাড়াগুলিতেও। বাড়ির দেওয়ালে ধরেছে ফাটল। এঁদের মনের মধ্যেও ভয় ঢুকেছে। এদিকে KMRCL সূত্রে গতকাল দাবি করা হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১১টি উত্স দিয়েই জল ঢোকা আটকানো সম্ভব হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, বর্ষায় জলস্তর বাড়লে নতুন করে সুড়ঙ্গে জল ঢুকবে না তো? আবার দেখা দেবে না তো একই বিপদ? KMRCL-এর তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে যাতে আর জল উঠে না আসে, সেটা সবার আগে দেখা হচ্ছে। চারঘণ্টা অন্তর নেওয়া হচ্ছে রিডিং।
আরও পড়ুন: West Midnapore News: নদীর পাড়ের পর চাষের জমিতে ধস, খড়গপুরে তুঙ্গে তৃণমূল-বিজেপি তরজা