কলকাতার দক্ষিণ অংশ ঘিরে ছড়িয়ে থাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনা (south 24 parganas) জুড়ে একাধিক পর্যটনের (tourism) জায়গা রয়েছে। ম্যানগ্রোভ-অরণ্যে (mangrove) ঘেরা এই এলাকা একদিকে অত্যন্ত উর্বর, অন্য দিকে বিপদসঙ্কুল রোমাঞ্চের হাতছানি এখানকার পদে পদে। বস্তুত, দক্ষিণবঙ্গের এই জেলার বিস্তৃতি কোথাও কোথাও খাস কলকাতার প্রাণকেন্দ্রকে ছুঁয়ে পৌঁছে গিয়েছে বঙ্গোপসাগরের কোলে থাকা প্রত্যন্ত গ্রামে। 


কী দেখবেন?
দেখার জায়গা অনেক। একঝলকে দেখে নেওয়া যাক?


বকখালি...
কলকাতা থেকে মাত্র ১৩২ কিলোমিটার দূরে নিরিবিলি সৈকত পেতে চান? এখানে চলে আসতে পারেন। নামখানা থেকে বাস, তার পর হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীর উপর দিয়ে ফেরি-সফর। সেখান থেকে নেমে ঘণ্টাদেড়েকের বাসযাত্রা। পৌঁছে যাবেন বকখালিতে। মাঝে ডায়মন্ড হারবারে ট্য়ুরিস্ট লজও রয়েছে।


সুন্দরবন ন্যাশনাল পার্ক...
দক্ষিণ এশিয়া-সহ গোটা বিশ্বেই সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। ভারত ও বাংলাদেশের ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই ব-দ্বীপ গোটা বিশ্বের বৃহত্তম নোনা ম্যানগ্রোভ অরণ্য বলে পরিচিত। 


কাকদ্বীপ...
গঙ্গা এখানে এসেই অনেকটা ছড়িয়ে গিয়েছে। জলপথে পরিবহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গাটি কলকাতা থেকে ৯১ কিলোমিটার দূরে। ঐতিহাসিক দিক থেকেও কাকদ্বীপের গুরুত্ব রয়েছে। অবিভক্ত বাংলার তেভাগা আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ছিল এই এলাকা।


সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ...
১৯৭৩ সালে এটি তৈরি হয়। ১৯৭৮ সালে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয় সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভকে। বর্তমানে যে এলাকাটি দেখা যায়, সেটি গঠিত ১৯৮৪ সালে। জীববৈচিত্রের জন্য ১৯৮৫ সালে অঞ্চলটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট শিরোপা পায়। চার বছর বাদে এটিকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাঘ, চিতল হরিণ, বুনো শূকর, গাঙ্গেয় শুশুক, কুমির, অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপ-সহ একাধিক প্রাণীর হদিশ পাওয়া যায় এখানে।


ভগবৎপুর ক্রোকোডাইল স্যানচুয়ারি...
গোটা রাজ্যে কুমির সংরক্ষণের একমাত্র প্রকল্প এটিই। হালে পর্যটকদের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লোথিয়ান দ্বীপ এবং সপ্তমুখী নদীয় মোহনার সঙ্গমে তৈরি এই স্যানচুয়ারি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও দেখার মতো।


সাগরদ্বীপ...
নিরিবিলিতে ছুটি কাটাতে চাইলে চলে আসতে পারেন সাগরদ্বীপেও। ছিমছাম এই দ্বীপে একটি লাইটহাউসও রয়েছে যেখান থেকে চারদিকের সৌন্দর্য সহজে ধরা পড়ে। জানুয়ারির মাঝামাঝি মকর সংক্রান্তির সময় হিন্দু পুণ্যার্থীদের ভিড় জমে এখানে।


কী ভাবে আসবেন?
সবচেয়ে কাছের ট্রেন স্টেশন ক্যানিং। সবচেয়ে কাছের শহর গোসাবা। কলকাতা থেকে যেতে হলে নামখানা, ন্যাজাট, সোনাখালি, রায়দিঘি ও ক্যানিংয়ে নেমে যেতে পারেন। 
 


আরও পড়ুন:কান পাতলে উঠে আসে পুরাণ-ইতিহাস, শহর থেকে কিছু দূরে, দঃ দিনাজপুরের এই জায়গাগুলি না দেখলেই নয়