সুনীত হালদার, হাওড়া: ফের অগ্নিকাণ্ড, এবার হাওড়ার শালিমার স্টেশনের ৫ নম্বর গেটের কাছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোর ৫টা নাগাদ আগুন লাগে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বেশ কয়েকটি দোকান। তবে আধঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। 


কী ঘটেছিল?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আজ ভোরে যখন তারা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিলেন তখন দেখতে পান একটি পান বিড়ির দোকান জ্বলছে। কিছুক্ষণের মধ্যে পাশাপাশি আরও কয়েকটি খাবার, মোবাইল রিচার্জ, প্লাস্টিকের খেলনার দোকানেও আগুন ধরে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বালতি করে জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করেছিলেন। দ্রুত খবর দেওয়া হয় দমকল এবং বি গার্ডেন থানায়। দমকলের দুটি ইঞ্জিন পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে। তার পর আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। কী কারণে আগুন লেগেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। হতাহতের এখনও পর্যন্ত কোনও খবর নেই। তবে অন্তত ৮টা দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, কালীপুজো ও তার আগে থেকে একের পর এক ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেই চলেছে কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায়।


একের পর এক আগুন...
দিন আটেক আগে বিধ্বংসী আগুনের খবর ছড়িয়েছিল চেতলার আবাসনে। সেবার ধনশ্রী এনক্লেভের চার তলার ফ্ল্যাটে আগুন লাগে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। তবে স্থানীয়দের আশঙ্কা ছিল, আশপাশের ফ্ল্যাটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে আগুন। কোনও ভাবেই যাতে অগ্নিকাণ্ড যাতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, সেই চেষ্টাই করেছিল দমকল। এর পর কালীপুজোর দিন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয় বানতলা চর্মনগরীর এক ব্যাগ তৈরির কারখানা ও গুদামে। চর্মনগরীর জোন ৫-এর ওই অগ্নিকাণ্ডে পৌঁছে যান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছিল, কোনও ভাবে বাজি থেকে এই অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়ে থাকতে পারে। তবে আগুন লাগার কারণ স্পষ্ট হয়নি। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, তাতে কারখানা ও গুদামে বিপুল পরিমাণ দাহ্য পদার্থ ও রাসায়নিক রাখা ছিল। সম্ভবত তার ফলেই আগুন গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে উপরের তলাগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। চিন্তার বিষয় হল, যখন অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়েছে তখনও কারখানার ভিতরে জনা পনেরো শ্রমিক কাজ করছিলেন। তাঁরা আটকে পড়েন। উপায় না দেখে একসময়ে পাঁচ তলার ছাদে ছুটে যেতে হয় তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও দমকলকর্মীদের তৎপরতাতেই তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এই মুহূর্তে একটি হাইড্রলিক ল্যাডার নিয়ে এসেছে দমকল। সেটি দিয়েই আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই হাইড্রলিক ল্যাডারই অন্তত ১০ জনের উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। কিন্তু মূল উদ্বেগ এখনও কাটেনি। আগুনের লেলিহান শিখা কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে? তীব্র উত্তাপ ছড়াচ্ছে এলাকায়। সঙ্গে কালো ঘন ধোঁয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মরিয়া চেষ্টা করছে দমকল। কিন্তু দোতলা থেকে তিনতলায় ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। সব মিলিয়ে কঠিন লড়াই।


আরও পড়ুন:হ্যালোউইন ঘিরে উন্মাদনা, ভিড়ের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট, মৃত বেড়ে ১৪৯