কাডেকলকাতা: দমদমের ছাতাকলে মেলার মাঠের কাছে ঝুপড়িতে বিধ্বংসী আগুন (Dum Dum Fire)। দাউদাউ আগুনে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আতঙ্ক। ঘটনাস্থলে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ছাতাকল মেলার মাঠ এলাকায় ঝুপড়িতে আগুন লাগে। বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ আগুন লাগে। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাও। এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে বস্তির সামনের অংশ কার্যত ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। কী থেকে আগুন লাগল, এখনও স্পষ্ট নয়। (Kolkata Fire Incident)
ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে দাউদাউ করে আগুনের লেলিহান শিখা চোখে পড়ছে। চেষ্টা চালানো হলেও এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি আগুনকে। জলা জমি থেকে বালতি করে জল নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয়রাও। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে এলাকা। বস্তি এলাকায় দাহ্য পদার্থ থাকাতেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এলাকায় প্লাস্টিকের স্তূপ জমা হয়ে রয়েছে। সেগুলিকে সরানো হচ্ছে, যাতে আগুন আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে না পারে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা কাজে বেরিয়েছিলেন। খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। ওই বস্তিতে প্রায় ২ হাজারের বেশি ঘর ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সকাল সকাল বস্তির বাসিন্দা প্রাপ্তবয়স্করা কাজে বেরিয়ে যান। ভিতরে কেউ আটকে রয়েছেন কি না, সেই নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে মানুষ না থাকলেও, খাটালে ভিতরে গরু-বাছুর ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘিঞ্জি এলাকায় দমকলের ইঞ্জিন ঢুকতেও বেগ পেতে হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ নিয়ে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, “সকালেই খবর পাই আমরা। গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন। আমি নিজেও যাচ্ছি। আমাদের একটি রোবট রয়েছে। আগুন নেভাতে রোবটও পাঠিয়েছি। গাড়ি যদি ঢুকতে না পারে, রোবট ব্যবহার করা আগুন নেভানোর চেষ্টা হবে।” ঘনবসতি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ফলে সব ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। তাঁদের পুনর্বাসনের বিষয়টি সরকার দেখবে বলে জানিয়েছেন সুজিত।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন, কত জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, দেখা হচ্ছে। সেই মতো ব্যবস্থা করবে সরকার। ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুজিত জানান, সব মিলিয়ে ১০টির উপর দমকল ইঞ্জিন পাঠানো হয়। রাস্তা সরু বলে ঢুকতে অসুবিধা হচ্ছিল। আমাদের দুই কাউন্সিলর রয়েছেন সকাল থেকেই। অফিসাররা রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে রাজ্য সরকার। প্রায় ৪০-৫০টি বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বলে খবর মিলছে।
এদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছন সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, "আপাতত রক্ষা এবং উদ্ধার। খাটালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুনলাম। অনেকে নাকি খালে ঝাঁপ দিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। কী করে হল, না হল, সেসব না হয় পরে তদন্ত হবে। আগে সুরক্ষার দিকে নজর দিতে হবে। এখানে রাজনীতি দেখবেন না কেউ। যতটা পারবেন উদ্ধার করুন।" সঙ্কীর্ণ রাস্তায় দমকলেকে ঢুকতে বেগ পেতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুজনও। স্থানীয়দের দাবি, কিছুদিন আগে ছাতাকলে নতুন একটি সেতুর নির্মাণ হয়, তার জন্যই বস্তি এলাকায় বড় গাড়ি ঢুকতে পারে না।