ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: ছটপুজোয় শহরে শব্দদানবের (Firecrackers On Chhath Puja 2023) তাণ্ডব। নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেদার ফাটল নিষিদ্ধ শব্দবাজি (sound pollution on Chhath Puja 2023)। কোথাও থানার নাকের ডগায়, কোথাও আবার হাসপাতালের সামনেই উৎসব পালনের নামে চলল নিষিদ্ধ বাজি ফাটানো। যদিও ছটপুজোয় দূষণ আটকাতে দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর ও পূর্ব কলকাতার সুভাষ সরোবরে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ছিল নিরাপত্তার কড়াকড়ি। কিন্তু নিষিদ্ধ বাজি আটকানোর ক্ষেত্রে কোনও তৎপরতাই চোখে পড়ল না পুলিশের। পুজোর মুখে আতসবাজির শব্দমাত্রা ৯০ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবল করেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এ নিয়ে চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে পরিবেশ কর্মীদের অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। প্রশ্ন উঠছে, এই শব্দ-তাণ্ডব কি সেই সিদ্ধান্তেরই জের? 


কোথায় কী?
কোথাও সারা রাত, কোথাও আবার ভোরের আলো ফোটার আগে থেকে চকোলেট বোম, পটকার মতো বাজি ফাটার অভিযোগ উঠেছে। সঙ্গে আতসবাজি তো ছিলই। অথচ, কালীপুজোয় দেদার শব্দবাজি ফাটার পর বহু মানুষ গ্রেফতার হয়েছিলেন। তা হলে কি তাতেও টনক নড়েনি? কিছুদিন আগে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, আতসবাজির ক্ষেত্রে শব্দমাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। তার পর থেকেই আশঙ্কার প্রহর গুনতে শুরু করেছিলেন চিকিৎসক থেকে পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, এর পর শব্দদানবের তাণ্ডব বাড়বে। কালীপুজো ও ছটপুজোর ক্ষেত্রে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। হাসপাতালের সামনেই ফাটানো হচ্ছে শব্দবাজি, অভিযোগ এমনই। এমনকি পুলিশের গাড়ি সামনে থাকা সত্ত্বেও  নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানো হচ্ছে বলে দাবি বহু মানুষের। কালীপুজোর সময় অনেকে অভিযোগ করেন, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বাজি ফাটানোর জন্য ২ ঘণ্টা নির্দিষ্ট করে দিলেও রাতভর বাজি ফেটেছিল। শব্দদূষণের সঙ্গে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে বায়ুদূষণও। দেদার বাজি ফাটানোয় বায়ুদূষণের মাত্রাও বাড়ছে শহরে, আশঙ্কা বাসিন্দাদেরই অনেকের। 


কালীপুজোর ছবি...
ছটপুজোর এই ছবি কালীপুজোর স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। সে দিন, রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টার নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে দেদার পুড়েছিল বাজি। কলকাতা-জুড়ে শব্দদানবের দাপাদাপি শোনা গিয়েছিল সে রাতেও। রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও দেদার পোড়ে বাজি। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ৪১৪ কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ৪৪৪ জনকে। এর মধ্যে উশৃঙ্খল আচরণের জন্য ১৭১ জনকে পাকড়াও করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় সাড়ে ৯ কেজি শব্দবাজি। এছাড়াও রাতে দমদমের মতিঝিলে একটি বাড়িতে আগুন লাগে। শিলিগুড়ির একটি বাজার এলাকায় আগুন লাগে। ক্ষতিগ্রস্থ হয় বেশ কয়েকটি দোকান। কিন্তু এত কিছুর পরও থামানো গেল না দৌরাত্ম্য।


আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ দিকে ১৫ ডিগ্রিতে নামবে পারদ ! শীতের কামড় কোথায় কোথায় ?