জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির মালবাজারে মাল নদীতে ফের হড়পা বান। অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা। আগামীকাল বিসর্জন। তার আগে মাল নদীর ধারে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে আলো লাগানোর কাজ করছিলেন কয়েকজন। দুুপুরে হড়পা বানে ভেসে যায় বাঁশ ও আলোর টাওয়ার। বরাত জোরে বেঁচে যান অস্থায়ী পুরকর্মীরা। এর আগে ২০২২ সালে বিজয়া দশমীর রাতে মাল নদীতে হড়পা বানে তলিয়ে গিয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়। গতকাল মাঝরাত থেকে সিকিম ও ভুটানে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেই কারণেই মাল নদীতে হড়পা বান। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক।
এর আগে চলতি বছরে গত ৩০ জুন রাতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে তৈরি হড়পা বান হয় হিমাচলপ্রদেশের মাণ্ডি এলাকায়। মাণ্ডি জেলার গোহর মহকুমার তলওয়ার গ্রামে বাবা-মা ও ঠাকুরমাকে হারালেও বরাত জোরে প্রাণ বেঁচে যায় ১১ মাসের শিশু। সেই শিশুর নাম নিকিতা। নিকিতার বাবা, বছর ৩১-এর রমেশ কুমার চেষ্টা করেছিলেন জল যাতে বাড়িতে না ঢোকে। কিন্তু, তা তিনি করতে পারেননি। পরে একটি স্তূপে তাঁর দেহ পাওয়া যায়। নিকিতার মা তথা বছর ২৪-এর রাধা দেবী ও তার ঠাকুমা, বছর ৫৯-এর ঠাকুমা পূর্ণু দেবীকেও ভাসিয়ে নিয়ে যায় জল। যদিও, তাঁদের কোনও হদিশ মেলেনি। পুরো তলওয়ার গ্রাম কার্যত ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়। এই ঘটনার পর গ্রামবাসী যখন দেখতে বেরোন কে কে বেঁচে আছে, সেই সময় এক বয়স্ক নিকিতার কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। তিনি সঙ্গে সঙ্গে অন্যদের সতর্ক করেন। নিকিতার আত্মীয়দের বিষয়টি জানানো হয়। নিকিতার দুই পিসি তারা দেবী ও কীর্ণ দেবী তাঁরা নিকিতার যত্ন নিতে এগিয়ে আসেন। শুধু তা-ই নয়, গোটা এলাকা এগিয়ে আসে। এনিয়ে খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক দম্পতি এবং বিদেশ থেকেও কেউ কেউ নিকিতাকে দত্তক নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁরা নিকিতার আত্মীয়দের ও প্রশাসনের কাছে এই আবেদন জানান।
এর আগে কয়েক বছর আগে ডুয়ার্স ও সেই সংলগ্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত হওয়া বৃষ্টির জলের তোড়ে হঠাৎ করে হড়পা বান দেখা দিয়েছিল মালবাজারের মাল নদীতে। তীব্র জলস্রোতে ভেসে যায় একটি বড় ট্রাক। কপাল জোরে রক্ষা পান ট্রাকের ড্রাইভার শিপেন রায় এবং খালাসী। গাড়ি পরিষ্কার করার জন্য মূল নদীর পাশের অংশে ট্রাক নামিয়ে ধোয়ার কাজ চলছিল। হঠাৎ করে জল বেড়ে যাওয়ায় বাকিরা তীরে উঠে আসতে পারলেও আটকে পড়েন ট্রাকের ড্রাইভার এবং খালাসী। এরপর জলের স্রোত ক্রমশ বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে ট্রাকের মাঝামাঝি পর্যন্ত জল থাকলেও কিছু সময় পরই সেই জল উঠে আসে গাড়ির কাচ পর্যন্ত।