কলকাতা: বর্ষার মরসুম আসতেই শহরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট (Electrocution Death) হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে। তাতে নয়া সংযোজন ট্যাংরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক দোকানদারের মৃত্যুর ঘটনা। তা নিয়ে প্রশাসনের সমালোচনায় সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। এ বার তা নিয়ে মুখ খুললেন কলকাতার (Kolkata News) প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। তাঁর দাবি, একে অপরের উপর দায় চাপিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাতেই একের পর এক প্রাণহানি ঘটে চলেছে। 


শহরে একের পর এক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা


মঙ্গলবার সকালে এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হন শোভন।  সম্প্রতি একের পর এক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, "একে অপরের উপর দায় চাপিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। একের পর এক বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিক্রিয়া শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। খোলা তার ঢাকতে হবে। যাতে তা কোনওমতেই জলের সংস্পর্শে না আসে, তার ব্যবস্থা করতে হবে। মাথার উপর তারের জঙ্গল সরাতে হবে। দুর্ঘটনা কমাতে মাটির নীচ দিয়ে বিদ্যুত্‍ সরবরাহের ব্যবস্থা করুক সিইএসসি। বিদ্যুত্‍ চুরি ঠেকিয়ে নিজেদের বাড়তি আয়ের কিছুটা ব্যয় করতে হবে তাদের।"


শোভন আরও বলেন, "গত ১৫ বছর ধরে প্লাস্টিকে মোড়া যে  সংযোগ বসানো হয়েছে, তার মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম, তামার তার রয়েছে। ঝড়-জল, বৃষ্টিতে সেগুলি নষ্ট হচ্ছে। তা জলের সংস্পর্শে এসে দুর্ঘটনা ঘটছে। তা বন্ধ করতে অবিলম্বে ইমপ্লিমেনটেশন, অপারেশন এবং মেইনটেন্যান্সে জোর দিতে হবে। তিলজলা, তোপসিয়া, বেহালা, গার্ডেনরিচ, যাদবপুর, যে প্রান্তেই যান, দেখবেন উপরে জঙ্গল হয়ে রয়েছে। খোলা তার চলে গিয়েছে। খুঁটিও পচে যাচ্ছে, পড়ে যাচ্ছে। বাচ্চাদের কী অভিজ্ঞতা রয়েছে! হাত পড়তেই পারে। ফলে মৃত্যুর হাতছানি সর্বত্র। সাপের ছোবলের মতো। প্রাণ যাওয়া নিশ্চিত।"



আরও পড়ুন: Mithun Chakraborty: মিঠুন পরমাণু বোমা! সঠিক সময়ে প্রয়োগ, বললেন সুকান্ত


বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কলকাতা পৌরসভা এবং বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে দায়ী করেন শোভন। তিনি বলেন, "সময় এসেছে ব্যবস্থা নেওয়ার। কলকাতা বিদ্যুৎ পরিষেবা সরবরাহ সংস্থা এবং কলকাতা পৌরসভাকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের মোটা টাকার ঋণ দেবে ব্যাঙ্ক। মাটির তলা দিয়ে তার নিয়ে যাওয়া হোক। কিস্তিতে সেই টাকা শোধ করা হোক। বাংলার যে কোনও শহর, কলকাতাতেও পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। বাইপাসের আশেপাশে ১০৭, ১০৮, ১০৯ হয়ে গড়িয়া পর্যন্ত যান, দেখবেন হাইটেনশন তার শহরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কিছু কিছু বাড়ির ৫-৬ মিটারের মধ্যে হাইটেনশন পোস্ট রয়েছে, যা থেকে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়। তাতে স্পর্শ করতেও হবে না, ৬০০০, ৮০০০, ১২০০০ ভোল্টে এমনিই মৃত্যু হবে। আমার মনে হয় কারও উপর দোষ না চাপিয়ে, কলকাতা পৌরসভা এবং বিদ্যুৎ সংস্থাকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের দায় নেই, তা হতে পারে না। বিদ্যুৎ চুরি আটকাতে স্মার্ট মিটার এসে গিয়েছে। তাতে লাভ বাড়ছে। সেই টাকা দিয়েই নিরাপদ পরিষেবার অর্থ বহন করতে হবে।"


বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন শোভন


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ গোবিন্দ খটিক রোডে কচুরির দোকানে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারে আগুন ধরে যায়। আশেপাশের লোকজন যখন আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন, সেই সময় দোকানের শাটারে হাত লেগে ৩৫ বছর বয়সি বান্টি হালদার নামের এক ব্যক্তির। যদিও মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, সকাল ৯টা নাগাদ রাস্তার ফিডার বক্স থেকে আগুনের ফুলকি বেরোতে শুরু করে।সেখান থেকে বান্টির কচুরির দোকানে আগুন লেগে যায়। প্রাণ বাঁচাতে দোকান থেকে বেরিয়ে বাতিস্তম্ভে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন  বান্টি। যদিও এই অভিযোগ খারিজ করেছে পুলিশ। এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।