কলকাতা: ভোটের মুখে বিজেপি-তে (BJP) যোগ দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। গা গরম করা ছবির সংলাপ আউড়ে উত্তেজিত করেছিলেন বিজেপি-কে। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি হেরে যাওয়ার পর বঙ্গ রাজনীতি থেকে কার্যত গায়েব হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি ফের বাংলায় প্রত্যাবর্তন করেছেন 'ফাটাকেষ্ট' মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। তাঁকে এ বার পরমাণু বোমার (Nuclear Bomb) সঙ্গে তুলনা করলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিঠুনকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের ইঙ্গিত দিলেন।


বঙ্গ রাজনীতিতে ফের সক্রিয় মিঠুন!


সোমবার কলকাতায় পা রেখেছেন মিঠুন। সুকান্তর আমন্ত্রণ রক্ষা করতে সন্ধেয় রাজ্য বিজেপি-র সদর দফতরেও যান। সেখানে সুকান্তর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, বিজেপি-র সাধারণ কর্মী হিসেবেই কাজ করবেন। দল যে নির্দেশ দেবে, যে দায়িত্ব দেবে পালন করবেন নিষ্ঠা ভরে। তাঁকে কী দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা যদিও খোলসা করেননি মিঠুন। তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে তাঁকে ব্যবহার করা হবে আগামী দিনে, সেই ইঙ্গিত দেন সুকান্ত। 



সোমবার মিঠুনের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন সুকান্ত। রাজ্য বিজেপি-তে মিঠুন কী ভূমিকা পালন করতে চলেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, "মিঠুনদা হেভিওয়েট প্রচারক, ইংরেজিতে যাকে স্টার ক্যাম্পেইনার বলি আমরা। স্বাভাবিক ভআবেই সেই অস্ত্রকে নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যবহার করা হবে। যুদ্ধে সবসময় তো পরমাণু বোমা ব্যবহার করা হয় না! আগে ছোটখাটো হ্যান্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়। যখন পরমাণু বোমার প্রয়োজন হবে, আমরা চার্জ করব।"


আরও পড়ুন: Mithun Chakraborty: এবার কোন ভূমিকা বঙ্গ রাজনীতিতে, প্রশ্ন এড়ালেন মিঠুন চক্রবর্তী


তবে সুকান্তর কথাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, "সামনের বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। লোকসভা নির্বাচন তার পরের বছর। মিঠুনের কোনও প্রভাব নেই। বলিউডে প্রভাব হারিয়ে যেমন উটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, হোটেল খুলেছিলেন, ওঁর সেসবই করা উচিত। যাঁদের দাঁড়িয়ে থেকে লড়াই করার ক্ষমতা নেই, এক দল থেকে সব নেওয়ার পর যাঁরা দল পরিবর্তন করেন, তাঁরা বাংলায় কী পরিবর্তন করবেন! বাংলার মানুষ এ সব পছন্দ করেন না।"


প্রথম জীবনে নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে খোলামেলা ছিলেন মিঠুন। সেই নিয়ে গর্ববোধ করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু ২০১৪ সালে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোনয়ন পেয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হন তিনি। 


মিঠুনকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল


কিন্তু ২০২১-এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে আচমকা রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন মিঠুন। তত দিনে সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে তাঁর একান্ত সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এর পর যাবতীয় জল্পনাকে সত্য প্রমাণিত করে ২০২১-এর ২৭ মার্চ বিজেপি-তে যোগদান করেন মিঠুন। 


এর পর বাংলায় গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রচারেও দেখা গিয়েছে মিঠুনকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে কলকাতার ব্রিগেডের সভা থেকে গা গরম করা ভাষণও দিতে দেখা যায় তাঁকে। বিখ্যাত সিনেমার সংলাপ 'আমি জাত গোখরো, এক ছোবলেই ছবি', 'মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে',এমন সব মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান তিনি।