কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ( SSC Scam ) ইডির তল্লাশিতে এখনও পর্যন্ত যে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, সেটা কিছুই নয়! এবিপি আনন্দর (ABP Ananda ) কাছে বিস্ফোরক তৃণমূল আমলের SSC-র প্রথম চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee ) একা এই কাজ করেছেন, এটাও মেনে নেওয়া কঠিন।
টাকা কার ?
তাঁর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, এই যে বিপুল পরিমাণে টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ইডি পেল, সেই টাকা কার ? পার্থ বা অর্পিতা, আলাদা আলাদা ভাবে অস্বীকার করে এসেছেন টাকার মালিকানার কথা। দুজনেই বলেছেন, সে টাকা তাঁর নয় ! তবে কার ? তৃণমূল আমলের SSC-র প্রথম চেয়ারম্যানের দাবি, যিনিই করে থাকুন, এই টাকার দায় সে প্রথমে স্বীকার করবে না স্বাভাবিক ভাবেই। কারণ তাহলে অন্যায় স্বীকার করা হয়ে যায়। তাই প্রথমে অভিযুক্ত বলবেনই টাকা তাঁর নয় , সেটাই স্বাভাবিক।
' নানারকম চাপ আসত, তবে সরাসরি নয়'
তিনি আরও বলেন, পদে থাকাকালীন তাঁর কাছে নিয়োগের জন্য নানারকম চাপ আসত, তবে সরাসরি নয় ! কেউ হয়ত ড্রাইভারের মাধ্যমে দারওয়ানের কাছে চিরকুট দিয়ে যেতেন, কেউ সুপারিশ পাঠাতেন সেক্রেটারির কাছে।
আগেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে এবিপি আনন্দ-র ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে মুখ খুলেছিলেন চিত্তরঞ্জন, আবার কথা বললেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে। তাঁর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, যখন তাঁকে পদ ছাড়তে বলা হয়, তখন কারণ জিগ্যেস করেননি। তাঁর সোজা,সাপ্টা জবাব, ' উনি তো নিজেই বলতেন, উনিই সেকেন্ড ম্যান ! অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছিলেন পার্থবাবু।'
এত টাকা কি পার্থ বাবুরই ?
তবে এত টাকা কি পার্থ বাবুরই ? 'সেটা কিছুই নয়! ' বিস্ফোরক চিত্তরঞ্জন। যদি ২০ হাজার চাকরি বিক্রি করা হয়, প্রত্যেকের থেকে যদি ১০ লাখ টাকা করে নেওয়া হয় আর তা ধাপে ধাপে ঘুরে ৬ লাখ টাকা টেবিল অবধি আসে, তাহলে ১২০০ কোটি টাকা হয়ে যায় ! আর পাওয়া গিয়েছে তো ৫০ কোটি ! তবে তিনি দাবি করেন, এই কাজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একার পক্ষে তো সম্ভব নয়, নইলে গ্রাসরুট লেভেল থেকে এভাবে দিনের পর দিন টাকা সংগ্রহ হল কীভাবে।
আগেও ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেন, ' SSC’র চেয়ারম্যান পদটিকে অনেকেই রাজনৈতিক নিয়োগ বলে থাকেন, সেটি শ্রুতিকটূ হলেও পুরোপুরি অস্বীকার করা যায় না। তাই সরকার চালায় যে দল, তাদের একটা প্রভাব মানতেই হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তখন শিক্ষামন্ত্রী না থাকলেও, তৃণমূলের মহাসচিব ছিলেন। তাই তিনি যখন কারও কথা বলছেন, তখন আর অন্যথা করার উপায় থাকে কি ? '
'অর্কেস্ট্রা এমনি তৈরি হয় না'
চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বলেন, 'কেউ নিরপরাধ নয় । দুর্নীতির কথা আমি পার্টির গোচরে এনেছিলাম। কিন্তু পার্টি যা বুঝেছে করেছে। .... ভাল করার পরও যদি পুরস্কারের বদলে তিরস্কার মেলে, তাহলে বলার কিছু থাকে না .... অর্কেস্ট্রা এমনি তৈরি হয় না। '
আরও পড়ুন :